• ঢাকা

  •  শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪

অপরাধ

পুলিশ চাইলেই কি মোবাইল ফোন তল্লাশি করতে পারে, কি বলছে আইন?

নিউজ ডেস্ক:

 প্রকাশিত: ০৯:০৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২

পুলিশ চাইলেই কি মোবাইল ফোন তল্লাশি করতে পারে, কি বলছে আইন?

প্রতীকী ছবি

অতিসম্প্রতি বাংলাদেশে মোবাইল ফোন তল্লাশি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ তোলপাড় চলছে। এ প্রসঙ্গে বিবিসি বাংলাকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার বলছেন, ‘মোবাইল ফোন পুরোপুরি একজনের ব্যক্তিগত একটি যন্ত্র। আদালতের আদেশ ছাড়া কোনভাবেই সেটা সার্চ করার এখতিয়ার কারও নেই। কারণ এই ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার তাকে বাংলাদেশের সংবিধানে দেওয়া হয়েছে।’

তিনি জানান, তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে বহুদিন যাবৎ ব্রিটিশ আমলের আইন অনুসরণ করে করা হলেও ২০০৩ সালে হাইকোর্ট বিনা পরোয়ানায় (৫৪ ও ১৬৭ ধারায়) গ্রেপ্তার ও রিমান্ডের ক্ষেত্রে ১৫টি নির্দেশনা জারি করেন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের এপ্রিলে কিছু সংশোধন সাপেক্ষে সুপ্রিম কোর্ট সেই আদেশ বহাল রাখেন। সেখানে বলা হয়েছে, কোনো পুলিশ কর্মকর্তা সন্দেহের বশে কাউকে তল্লাশি করা দরকার মনে করলে সেটা ডায়রিতে লিপিবদ্ধ করে সাক্ষীর উপস্থিতিতে করবেন। কিন্তু সেটা শুধুমাত্র দেহ তল্লাশির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলছেন, ‘মোবাইল হচ্ছে খুব পার্সোনাল একটি গ্যাজেট, যেটা মালিকের পারমিশন ছাড়া ধরার কারো আইনগত এখতিয়ার নেই। যদি কোনো মামলার অংশ হিসেবে মোবাইল ফোন আদালতে উপস্থাপন করা হয়, তখন আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তকারী ব্যক্তিরা সেটা দেখতে পারবে। এছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে নাগরিকদের ব্যক্তিগত যোগাযোগের গোপনীয়তার যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, সেটার গুরুতর লঙ্ঘন। একপ্রকার ফৌজদারি অপরাধের মধ্যেও পড়ে।’

আইনজীবীরা বলছেন, পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোবাইল ফোন দেখতে চাইলে যেকোনো নাগরিক তাতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন। কারণ আইন অনুযায়ী, আদালতের নির্দেশ ছাড়া তারা সেটা করতে পারেন না। তবে তিনি এও স্বীকার করেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এরকম কোনো উদাহরণ নেই।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলছেন, ‘যেহেতু এটা একপ্রকার হয়রানি, সেজন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। অথবা তিনি ফৌজদারি মামলাও করতে পারেন। কিন্তু আমাদের দেশে আসলে এরকম প্র্যাকটিস নেই।’

একবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় সান বার্নার্দিনোর ব্যবহৃত আইফোনের লক খোলার জন্য এফবিআইয়ের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল অ্যাপল। কিন্তু তাতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হবে জানিয়ে রাজি হয়নি অ্যাপল। এরপর আদালতে গেলেও প্রত্যাখ্যান করার পর সংস্থাটি আদালতে গিয়েছিল। শেষপর্যন্ত শুনানির আগে থার্ডপার্টির সহায়তায় ফোনের তথ্য উদ্ধার করে সংস্থাটি। সূত্র: বিবিসি বাংলা

ডিসেম্বর ১৩, ২০২২

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: