• ঢাকা

  •  বুধবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৪

ফিচার

তাড়াশের দই মেলা ধরে রেখেছে আড়াইশ বছরের ঐতিহ্য

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

 প্রকাশিত: ১২:৪০, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩

তাড়াশের দই মেলা ধরে রেখেছে আড়াইশ বছরের ঐতিহ্য

ছবি: সময়বিডি.কম

সিরাজগঞ্জ: চলনবিল অধুষ্যিত তাড়াশে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দিনব্যাপী দই মেলাকে ঘিরে ইতোমধ্যেই এলাকায় সাঁজ সাঁজ রব পড়ে গেছে। এই দই মেলা ধরে রেখেছে আড়াইশ বছরের ঐতিহ্য। 

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকাল থেকে নামিদামি ঘোষদের দই আসার মধ্যদিয়ে তাড়াশের প্রায় আড়াইশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী দই মেলা শুরু হয়ে থাকে। দিনব্যাপী এই মেলায় দইসহ রসনাবিলাসী খাবার বিকিকিনি হবে। 

ঐতিহ্যবাহী চলনবিলের তাড়াশে দই মেলা নিয়ে রযেছে নানা গল্প কাহিনী। তাড়াশ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রজত ঘোষ ও সনাতন সংস্থার সভাপতি সঞ্জিত কর্মকার জানান, তাড়াশের তৎকালীন জমিদার বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম দই মেলার প্রচলন করেছিলেন। সাধারনত জনশ্রুতি আছে জমিদার বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। এ ছাড়া জমিদার বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নে এ অঞ্চলে ঘোষদের তৈরি দই পরিবেশন করা হতো। আর সে থেকেই জমিদার বাড়ির সম্মুখে রসিক লাল রায় মন্দিরের পার্শ্বের মাঠে স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী দই মেলা বসতো। 

প্রতি বছর শীত মৌসুমের মাঘ মাসে শ্রী পঞ্চমী তিথিতে দই মেলায় বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর থেকে ঘোষেরা দই এনে মেলায় পসরা বসিয়ে বিকিকিনি করতেন। কথিত আছে সবচেয়ে ভাল সুস্বাদু দই তৈরি কারক ঘোষকে জমিদারের পক্ষ থেকে উপঢৌকন প্রদান করা রেওয়াজ ছিল।

তবে জমিদার আমল থেকে শুরু হওয়া তাড়াশের দইয়ের মেলা এখনও মাঘ মাসের শ্রীপঞ্চমী তিথিতে উৎসব আমেজে বসার বাৎসরিক রেওয়াজ এখনও আছে এবং তা তিন দিনের পরিবর্তে একদিন হয়ে থাকে।

দইয়ের মেলায় আসা এ অঞ্চলের দইয়ের স্বাদের কারনে নামেরও ভিন্নতা রয়েছে। যেমন - ক্ষীরসা দই, শেরপুরের দই, বগুড়ার দই, টক দই, শ্রীপুরী, ডায়বেটিস দই-সহ এ রকম হরেক নামে দামের হেরফেরে বিক্রি হয় দই। বিশেষ করে বগুড়ার শেরপুর, চান্দাইকোনা, শ্রীপুর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশের দই প্রচুর বেচাকেনা হয়। 

স্থানীয় একাধিক ঘোষের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুধের দাম, জ্বালানি, শ্রমিক খরচ, দই পাত্রের মূল্য বৃদ্ধির কারনে দইয়ের দামও বৃদ্ধিও পাচ্ছে। তবে চাহিদা থাকার কারনে কোন ঘোষের দই অবিক্রিত থাকে না। যার কারনে মেলার আগেই ঘোষেরা দই তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

জানুয়ারি ২৬, ২০২৩

মৃণাল সরকার মিলু/এবি/

মন্তব্য করুন: