• ঢাকা

  •  রোববার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪

অর্থ ও কৃষি

ধ্বংসের পথে সাড়ে ২১ কোটি টাকার হাঁসের খামার

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: ২০:২৭, ১৫ অক্টোবর ২০২৩

ধ্বংসের পথে সাড়ে ২১ কোটি টাকার হাঁসের খামার

ছবি: সময়বিডি.কম

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় সরকারি হাঁস খামার নানা সমস্যায় জর্জরিত। বিদ্যুৎ সংকট, খাদ্য সংগ্রহ, ক্রয় বিক্রয়, যন্ত্রপাতি অকেজো ও যাতায়াতের সুব্যবস্থা না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হতে বসেছে। সাড়ে ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হাঁস খামার প্রজনন উন্নয়ন কেন্দ্রটি বছরে ২০ হাজার হাঁস পালনের কথা থাকলেও গত ২ বছরে ধরে ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ হাঁস পালন করা হচ্ছে। আর তা দেখভাল করার জন্য রয়েছে ৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।

এই অল্পসংখ্যক হাঁস পালনে প্রতিবছরে সরকারের বিপুল পরিমান অর্থ গচ্ছা যাচ্ছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়।

এদিকে বর্তমানে ডিমের দাম উর্ধ্বমুখী ও আমিষের চাহিদা পূরণে সরকার দেশের বাইরে থেকে ডিম আমদানি করে আসছে। 

সরেজমিন ও সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে ২১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে অবকাঠামোসহ ৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পটি প্রায় ৩ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয়। নির্মিত আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারে রয়েছে ৬টি হাঁসের সেড, ১টি হ্যাচারি ব্রিডার সেড, আধুনিক মানের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর যন্ত্র (ইনকিউবিটর), জেনারেটর ঘর, একটি গভীর নলকুপ, উন্নতমানের আবাসিক ভবন, অফিস কক্ষ, বিশাল গুদাম ঘর, সেইসাথে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর যন্ত্রটিতে একই সাথে (ইনকিবিউটর) ১৫ হাজার ৮০০ ডিম ঢুকানোর ব্যবস্থাও রয়েছে।

এ ছাড়া বছরে ডরমেটরিসহ প্রায় ২০ হাজার হাঁস পালনের ব্যবস্থা রয়েছে। আর সেই খামারটিতে এখন প্রায় ৪০০ হাঁস রয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি ও লাভজনক খামারটি এখন প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছে। খামারটির হ্যাচারিতে পর্যাপ্ত বাচ্চা উৎপাদন ব্যবস্থা থাকলেও এ যাবত দুই বার বাচ্চা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। অকেজো হয়ে আছে সরকারের কোটি কোটি টাকার মূল্যের ছয়টি সেড। 

প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক মো. বাবু মন্ডল জানান, প্রতিষ্ঠানটি শুরুর সময় প্রকল্পের আওতায় ছিল, তখন জনবল ছিল প্রায় ১৫ জন। কিন্তু এখন খামারে হাঁসের পরিমান কমে যাওয়ায় কর্মচারী কমে গেছে।

সাগর আহম্মেদ নামের আরেক শ্রমিক জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি, আমাদের এখানে হাঁস পালনের পর্যাপ্ত সেড রয়েছে, কিন্তু এখানে রয়েছে প্রায় ৪০০টির মতো হাঁস।

শাহ্ আলম নামের এক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই খামারটি শুরুর পর কিছু কার্যক্রম থাকলেও ৫ বছর যাবত প্রায় সেডগুলো ফাঁকা, অফিসারদের সুন্দর বাসভবন নির্মাণ করা হয়েছে, কর্মচারীদের বাসভবনগুলো সীমিত ভাবে ব্যবহার হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বাচ্চা উৎপাদন না হওয়ায় মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

হাঁস প্রজনন খামারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোছা. শাকিলা পারভীন জানান, এখানে বিদ্যুতের সমস্যার কারনে বাচ্চা উৎপাদন করতে পারছি না। এজন্য ৬টি শেডের মধ্যে ২টি শেডে মাত্র ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ হাঁস রয়েছে।
 
সরকারি খামার উন্নয়ন ও প্রজনন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মজিবর রহমান জানান, আমাদের এখানে রাস্তা অবস্থা বেহাল থাকায় খাদ্য পৌঁছাতে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না থাকা বাচ্চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। খামারটি মহাসড়ক থেকে অনেকটা ভিতরে হওয়ায় বাচ্চা উৎপাদন করে বাচ্চা বিক্রি করতে নানা সমস্যা হচ্ছে।

অক্টোবর ১৫, ২০২৩

মৃণাল সরকার মিলু/এবি/

মন্তব্য করুন: