• ঢাকা

  •  শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪

বাংলাদেশ

বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী সরস্বতী পূজা আজ

অনলাইন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: ০৮:০৬, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩

বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী সরস্বতী পূজা আজ

বিদ্যা ও জ্ঞানের আলো নিয়ে সবার জীবনে আসুক মা সরস্বতী। হিন্দুদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা আজ (২৬ জানুয়ারি)। প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে হয় বাগদেবীর এই আরাধনা। 

হিন্দু পুরাণ অনুসারে, মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আবির্ভূতা হয়েছিলেন দেবী সরস্বতী। মাঘ পঞ্চমীকে শ্রীপঞ্চমীও বলা হয়। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, শ্রীপঞ্চমীর দিন সকালেই সরস্বতী পূজা সম্পন্ন করা যায়। 

পুরাণ মতে, বসন্ত পঞ্চমী তিথিতেই ব্রহ্মার মুখগহ্বর থেকে সরস্বতীর সৃষ্টি হয়েছিল। আর সেই কারণে সরস্বতীর আরাধনা করা শাস্ত্রসম্মত। প্রাচীনকালে তান্ত্রিক সাধকেরা সরস্বতী-সদৃশ দেবী বাগেশ্বরীর পূজা করতেন বলে জানা যায়।

বাগদেবী, বিরাজ, ব্রাহ্মী, শতরূপা, মহাশ্বেতা, সারদা এমন বহু নামেই পরিচিতি। হিন্দুধর্ম মতে, ভক্তের হৃদয়ে তিনি সরস্বতী নামেই বিরাজমান।

পঞ্চমী তিথিতে অগণিত ভক্ত বিদ্যা ও জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর পাদপদ্মে প্রণতি জানাবেন তারা। 

এ উপলক্ষে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

সরস্বতী পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। 

রাষ্ট্রপতি বাণীতে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দেশের হিন্দুদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি সম্প্রীতির সুমহান ঐতিহ্য সুদৃঢ় করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে আহ্বান জানান অবদান রাখার। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে হিন্দুদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে জ্ঞানার্জনে ব্রতী হয়ে দেশের অগ্রযাত্রায় সবাইকে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান।

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মন্দির ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূজা ছাড়াও অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে আছে- পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরতি, আলোকসজ্জা ইত্যাদি।

সরস্বতী পূজা বাংলায় শুধুমাত্র সরস্বতী পূজাই নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু প্রথা, বহু নিয়ম। হিন্দুমতে, এদিন শিশুদের হাতেখড়ি দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে, পাড়ার সর্বজনীন মণ্ডপে কিম্বা বাড়ি বাড়ি এদিন ছোটদের হাতেখড়ি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। শিশুরা তাদের প্রথম অক্ষর লেখে। পড়াশোনার যাত্রা শুরু হয় এদিন থেকেই।

বাংলার বেশ কিছু এলাকায় সরস্বতী পূজার দিন নিম, হলুদবাটা মেখে স্নান করার প্রচলন রয়েছে। এর পেছনেও রয়েছে একটি বিশেষ কারণ। বসন্তের শুরুতে বসন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। গুটি বসন্তের সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্যই এই প্রথা। 

পরে সকালে স্নান সেরে হলুদ, সাদা বা সোনালী রঙের পোশাক পরে সরস্বতী পূজার পুষ্পাঞ্জলী দেওয়ার জন্য মন্ত্র পাঠ করেন। শিক্ষাক্ষেত্রে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আশীর্বাদের জন্য প্রার্থনা করেন সকলে।

সরস্বতী পূজার পুষ্পাঞ্জলীর মন্ত্র:

‘সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যেকমললোচনে,
বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যাং দেহি নমস্তুতে।
জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুকতাহারে।
বীণারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।
নমঃভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ।
বেদ-বেদাঙ্গ-বেদান্ত-বিদ্যা-স্থানেভ্য এব চ।।
এস স-চন্দন পুষ্পবিল্ব পত্রাঞ্জলি সরস্বতৈ নমঃ।।’

জানুয়ারি ২৬, ২০২৩

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: