• ঢাকা

  •  শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

বাংলাদেশ

পবিত্র ইস্টার সানডে আজ

নিউজ ডেস্ক:

 আপডেট: ০৯:০৪, ৯ এপ্রিল ২০২৩

পবিত্র ইস্টার সানডে আজ

ঢাকা: খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ইস্টার সানডে আজ (৯ এপ্রিল)। খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্টের পুনরুত্থান দিবস।

খ্রিষ্টানদের মতে, ইস্টার সানডেতে ঈশ্বরপুত্র যিশু খ্রিষ্ট মৃত্যুকে জয় করে পুনরুত্থিত হয়ে তাদের পাপ থেকে মুক্ত করেছিলেন। পুণ্য শুক্রবার বা গুড ফ্রাইডেতে বিপথগামী ইহুদি শাসকগোষ্ঠী তাদের কুসংস্কারাচ্ছন্ন শাসনব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে যিশু খ্রিষ্টকে অন্যায়ভাবে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করেছিল। মৃত্যুর তৃতীয় দিবস রবিবার তিনি মৃত্যু থেকে জেগে ওঠেন বা পুনরুত্থান করেন। যিশু খ্রিষ্টের পুনরুত্থানের এই রোববারকেই ইস্টার সানডে বা পুনরুত্থান রবিবার বলা হয়।

খ্রিস্টানরা ঐদিন মৃত্যুর বিরুদ্ধে যিশুখ্রিস্টের বিজয় উদযাপন করেন। খ্রিস্টে বিশ্বাসীদের কাছে এটি পুরাতন জীবনের অবসানের পরে নতুন জীবনের শুরুর প্রতীক। 

অত্যন্ত প্রাচীন এই অনুষ্ঠানটির সর্বপ্রথম লিখিত উল্লেখ পাওয়া যায় দ্বিতীয় শতকে। তবে সম্ভবত তারও আগেই যিশুর পুনরুত্থানের স্মরণে অনুষ্ঠান পালন করা শুরু হয়েছিল।

পুনরুত্থান পার্বণটি একটি রবিবারে পালন করা হয় বলে এর আরেক নাম পুণ্য রবিবার হলেও ঠিক কোন রবিবারে এটি অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত, এ নিয়ে খ্রিস্টীয় বিভিন্ন মন্ডলীর মধ্যে ব্যাপক মতভেদ আছে। আজ অবধি এ নিয়ে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। 

পশ্চিমী মন্ডলীগুলিতে পুনরুথান পার্বণ মহাবিষুব অর্থাৎ মোটামুটি ২১শে মার্চের পরের প্রথম পূর্ণিমাকে অনুসরণকারী প্রথম রবিবারে অনুষ্ঠিত হয়। সুতরাং পশ্চিমা খ্রিস্টীয়মন্ডলীদের জন্য পুনরুত্থান পার্বণটির সবচেয়ে আগের সম্ভাব্য তারিখ হল ২২শে মার্চ এবং সবচেয়ে দেরিতে অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য তারিখটি হল ২৫শে এপ্রিল।

অন্যদিকে পূর্বী প্রথানুবর্তী খ্রিস্টীয়মন্ডলীর মতানুযায়ী পুনরুত্থান পার্বণটি ৪ এপ্রিল ও ৮ মে তারিখের মধ্যবর্তী একটি রবিবারে উদযাপন করা হয়। সাধারণত পশ্চিমের পার্বণের এক সপ্তাহ বা তারও পরে। তবে কোনো কোনো বছরে কাকতালীয়ভাবে পশ্চিমী ও পূর্বী পার্বণগুলো একই তারিখে পড়তে পারে।

পুনরুত্থান পার্বণটি খ্রিস্টানদের জন্য এক দীর্ঘ ধর্মীয় পর্বের কেন্দ্রবিন্দু। পার্বণের আগে বহু খ্রিস্টান যিশুর উপবাসের অনুকরণে ৪০ দিনব্যাপী প্রার্থনা ও বাৎসরিক উপবাস করেন। পশ্চিমের দেশগুলোতে বাৎসরিক উপবাস পর্বটি একটি বুধবারে শুরু হয়, যাকে ইংরেজিতে অ্যাশ ওয়েন্‌সডে (Ash Wednesday) বলে ডাকা হয়। উপবাস পর্বটি একটি শনিবারে গিয়ে সমাপ্ত হয়, যার নাম পুণ্য শনিবার।

উপবাসের শেষের সপ্তাহটিকে পবিত্র বা পুণ্য সপ্তাহ নাম দেওয়া হয়েছে। পবিত্র শনিবারের ঠিক পরের দিন অর্থাৎ রবিবারটিই হলো পুনরুত্থান পার্বণের দিন। পুনরুত্থান পার্বণ একদিন পালিত হলেও এর সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় পর্বটি আরো আটটি রবিবার পর্যন্ত বজায় থাকে।

পুনরুত্থান পার্বণটি ভাবগম্ভীরভাবে গির্জায় ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দীপনায় পালিত হলেও এর সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো রীতিনীতি বসন্তের শুরুর সাথেই বেশি সম্পর্কিত। পাশ্চাত্যের শিশুরা এ সময় বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙে ডিম রঙ করে আনন্দ পায়। পার্বণের দিন বিশেষ ভোজের আয়োজন করা হয়। সবাই নতুন পোশাক পরিধান করে। [উইকিপিডিয়া থেকে]

আজকের দিনটি যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় পালন করবেন খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা। এ উপলক্ষে দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আজ সূর্যোদয়ের সময় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর টিঅ্যান্ডটি মাঠে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রার্থনা সংগীত ছাড়াও যিশু খ্রিষ্টের উদ্দেশে বাইবেল পাঠ করা হবে।

রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরের ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘ ও ঢাকা ওয়াইএমসিএর সামনের সড়কে ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে বিশেষ প্রাতঃকালীন উপাসনার আয়োজন করবে মিরপুর আন্তঃমান্ডলিক ঐক্য ও সহভাগিতা। এ ছাড়া রাজধানীর কাকরাইল ও তেজগাঁওয়ের ব্যাপ্টিস্ট চার্চ মিশনসহ সব গির্জা ও চার্চে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। চার্চগুলোকে বর্ণাঢ্যভাবে সাজিয়ে তোলা হবে।

ইস্টার সানডে উপলক্ষে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন, খ্রিষ্টান লীগ এবং ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ নেতারা পৃথক বিবৃতিতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এসব বিবৃতিতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জন্য দিনটিতে সরকারি ছুটি ঘোষণার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।

এপ্রিল ৯, ২০২৩

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: