• ঢাকা

  •  শুক্রবার, মে ৯, ২০২৫

জেলার খবর

গৌরীপুরে প্রায় ৩৮মাস পরে স্ত্রীর মামলায় কবর থেকে স্বামীর লাশ উত্তোলন

 আপডেট: ২২:৩৪, ৭ মে ২০২৫

গৌরীপুরে প্রায় ৩৮মাস পরে স্ত্রীর মামলায় কবর থেকে স্বামীর লাশ উত্তোলন

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়া গ্রামে ২০২২ সনের ১৭মার্চ বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে নিহত মৎস্য ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান খান চপল এর লাশ বুধবার (৭ মে) কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে স্ত্রী মোছা. শাহিদা আক্তার রুমার দায়ের করা মামলায় বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউএনও এম সাজ্জাদুল হাসানের উপস্থিতিতে এ লাশ উত্তোলন করা হয়। চপল এ গ্রামের নাজিম উদ্দিনের খানের পুত্র। তার বাবার দাবী, তার ছেলে চপল বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় গৌরীপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
অপরদিকে রোকনুজ্জামান চপলের স্ত্রী মোছা. শাহিদা আক্তার রুমা দাবী করেন, সম্পত্তির লোভে তার স্বামী চপলকে হত্যা করা হয়েছে। বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গেছে বলে প্রচার করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে আড়াল করতে চেয়েছিলো। স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে গৌরীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও আমলে নেয়নি পুলিশ। পরে তিনি ময়মনসিংহ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন ও মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সানোয়ার জাহান জানান, ২০২২সনে আদালতে মামলা করেন। সিআর তালিকাভুক্ত মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দেন। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে ফরনসিক রির্পোটের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। এ ঘটনায় রহস্য উদঘাটনে তদন্ত কাজ চলছে।
অপরদিকে গত বছরের ২৬জুন স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে শাহিদা আক্তার রুমা ও তার দু’সন্তান নিয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসেন। এ অনশনে মায়ের সাথে অনশনে ছিলেন কন্যা সুফফাত জাহান লামিয়া ও তার দু’পুত্র আবদুল্লাহ আল আফ্রিদি ও আবদুল্লাহ আফিফ। এতে পুরো শহরজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রুমা’র এ আকুতির সাথে হাজারো নেটিজেন সমর্থন জোগায়। শাহিদা আক্তারের ব্যানারে লেখেন ‘আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। আমার ও এতিম তিন সন্তানের ওপর হওয়া অন্যায়-অত্যাচারের বিচার চাই।’ বাড়িঘর, জমাজমি, মোটরসাইকেল ও ব্যবসার অর্থ ফেরত চাওয়ার বিষয়টি ব্যানারে উল্লেখ করেন এ নারী।
রুমা বলেন, আমার স্বামীর অনেক সম্পদ ছিলো। সমিতির অনেক টাকা ছিলো। এসবের লোভে আমার ভাশুর বিপ্লব খান আমার স্বামীকে মেরেছে। আর এ কাজে সহযোগিতা করেছে শ্বশুড় নাজিম উদ্দিন। ঘটনার পর পুলিশের কাছে বহুবার গিয়েছি। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাতে-পায়ে ধরেছি। তারপরেও মামলা নেয়নি। কোর্টে মামলা করার পরে পুলিশ প্রতিবেদন দিয়েছে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। আমার সেই মামলাটিও আদালত খারিজ করে দেয়। এরপরে আবার কোর্টে আবেদন করেছি, স্বামী হত্যার বিচার চ্ইা।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীকে হত্যার পর তার সহায়-সম্পত্তি, টাকা-পয়সা ওরা দখল করে নিয়েছে। বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তিন এতিম সন্তানকে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। তবে গৌরীপুর থানার প্রতিবেদন, অপমৃত্যু মামলা ও চপলের পরিবার সূত্র জানায়, চপল বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মারা গেছে।

এসবিডি/ওবায়দুর রহমান

মন্তব্য করুন: