সাপলুডো খেলার ইতিহাস
সাপলুডো বাঙালির প্রিয় একটি খেলা। এ যেন শুধু খেলা নয়, নস্টালজিয়া! এমন কোনো বাঙালি নেই, যিনি ছোটবেলায় সাপলুডো বা স্নেক-ল্যাডার্স খেলেননি!
লুডু খেলা বাংলাদেশে ও ভারতে অন্যতম বিনোদন হিসেবে বিবেচিত। ঘরের বিছানায় অথবা মাটিতে মাদুর পেতে যে কোনো বয়সের মানুষ এ খেলাটি খেলে অবসর সময় পার করে থাকে। বিশেষ করে গ্রামের বিবাহিত মহিলারা অবসর সময়ে এই খেলাটি খেলতে পছন্দ করে থাকেন। লুডু বিভিন্ন প্ৰকার হয়ে থাকে। এরমধ্যে ঘর লুডু, সাপ লুডু, পৃথিবী ভ্ৰমণ লুডু খুবই জনপ্রিয়।
প্রথমে বাচ্চাদের নীতিশিক্ষা দিতে ভারতে শুরু হয় এই সাপ-মইয়ের খেলা। তখন এর নাম ছিল 'মোক্ষপট'। পাপ-পুণ্যের বোর্ড ছোটোদের নীতিবোধ শেখাতো।
ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, খ্রীষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে ভারতে প্রথম সাপলুডো খেলা শুরু হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে শিশুদের নীতিবোধের শিক্ষা দিতেই শুরু হয়েছিল এই খেলা। এই খেলা দিয়ে বোঝানো হতো 'কর্ম' এবং 'কামনা'।
মোক্ষপটের মই পুণ্য-কে উপস্থাপন করতো, সাপগুলো উপস্থাপন করতো পাপ-কে । প্রত্যেকটি ভালো কাজ আমাদের ধাপে ধাপে শতকের ঘরে পৌঁছে দেয়, যা 'মোক্ষ' বা 'মুক্তি'। আর পাপ আমাদের নিম্নমানের পুনর্জীবন দেয়, অর্থাৎ সাপের লেজ পৌঁছে দিতো সাপ, ব্যাঙ ইত্যাদির ঘরে, যা নতুন জীবন।
আসল খেলায় মইয়ের থেকে সাপের সংখ্যা অনেক বেশি থাকতো এটা বোঝানোর জন্য যে, একটা জীবনে মুক্তির পথ অনেক বেশি শক্ত।
উনিশ শতকে এই খেলা বেশ পছন্দ হয় ইংরেজদের। দেখতে দেখতে ইংল্যান্ড হয়ে মোক্ষপট ছড়িয়ে পড়ে একাধিক ব্রিটিশ উপনিবেশে।
১৯৪৩ সালে আমেরিকায় খেলাটি শুরু হয়, নাম দেওয়া হয় 'শুট অ্যান্ড ল্যাডারস' । সেই খেলার পথপ্রদর্শক হন মিলটন ব্র্যাডলে।
মে ২৫, ২০২২
এসবিডি/এবি/
মন্তব্য করুন: