প্রাচীন নদীবন্দর ছিল রাঘবপুর, গাজীপুর, মধুপুর, কাশেরগঞ্জ, মোদ্দেরগঞ্জ ও পরানগঞ্জ

হিমালয় থেকে উদ্ভুত নদীগুলোর গতিপথ বহুবার পরিবর্তিত হয়েছে। যার ফলে এই নদীগুলোর তীরে যেমনি গড়ে উঠেছিল সমৃদ্ধ নানা শহর, তেমনি এগুলো আবার নদীগর্ভে বিলিনও হয়ে যায়। বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র নদী যমুনা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গোয়ালন্দের নিকট পদ্মার সাথে মিলিত হয়েছে। কিন্তু আগে ব্রহ্মপুত্রের গতি গারো পর্বতমালার পশ্চিম দিক দিয়ে পূর্ব দক্ষিনে প্রবাহিত হয়ে জামালপুর, ময়মনসিংহ ও মধুপুর জঙ্গলের পাশ দিয়ে ও ঢাকা জেলার পূর্বাঞ্চল হয়ে নাঙ্গলবন্দ ও সোনারগাঁও পাশে রেখে শেষে নারায়নগঞ্জের ধলেশ্বরীর সাথে মিলিত ছিল।
মোমেনসিং পরগনার রাঘবপুর, গাজীপুর, মধুপুর, কাশেরগঞ্জ, মোদ্দেরগঞ্জ ও পরানগঞ্জ নৌবন্দর ধ্বংস হওয়ার কারণ - ১৭৮৭ সালে বন্যা ও ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্র নদীর তলদেশ এবং কিছু জায়গা উঠিত হবার কারণে জামালপুরের ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে একটি যমুনা নদী সৃষ্টি হয় এবং পদ্মার সাথে মিলিত হয়। ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ৮০ শতাংশ কমে যাওয়ার কারণে ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদী দুই তিন কিলোমিটার প্রশস্থের সোহাই নদী শত বছর আগে গাজীপুর, রাঘবপুর, বিসকা, কলতাপাড়া এলাকায় মরা গাঙ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। বর্তমানে সোহাই নদী বলতে কিছু নেই সেখানে আছে শুধু ধান ক্ষেত আর বিল। ব্রহ্মপুত্র নদীর গতি পরিবর্তনে সোহাই নদী ও তার শাখা-প্রশাখা বিলীন হয়ে যায়। একইভাবে নদীর নিকটস্থ বিখ্যাত নৌবন্দর, বানিজ্য কেন্দ্র এবং নগরীও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এভাবে অনুমান করা হয় যে, বর্তমান সুন্দরবনের অভ্যন্তরেও এক সময় সমৃদ্ধ জনপদ ছিল। প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও মগ-পর্তুগীজ দস্যুদের অত্যাচারে তা ধ্বংস হয়।
ক্রিয়েটিভ এসোসিয়েশন এবং দি ইলেক্টোরাল কমিটি ফর পেন অ্যাওয়ার্ড অ্যাফেয়ার্সের যৌথ প্রয়াসে আড়াইশ' বছর আগে ব্রিটিশ ভূবিদ জেমস রেনেলের মানচিত্র সংগ্রহের মাধ্যমে প্রাচীন নদী বন্দর রাঘবপুর, গাজীপুর, মধুপুর, কাশেরগঞ্জ, মোদ্দেরগঞ্জ, পরানগঞ্জ ও মোমেনসিং পরগনার প্রাচীন নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া যায়। দেখে নেওয়া যাক কিছু পুরনো শহর ও বন্দর, যার প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছে ইতিহাসের ছাপ।
রাঘবপুর (Raagubpour):
রাঘুবপুর ময়মনসিংহ জেলার সদর উপজেলার অন্তর্গত একটি ঐতিহাসিক গ্রাম। এটি গৌরীপুর উপজেলার গাজীপুরের সীমানায় এবং তারাকান্দা উপজেলার মহজমপুর ও বিসকার সীমানায় অবস্থিত। এই গ্রামে এখনও ইতিহাসের গন্ধ লেগে আছে। রেনেলের মানচিত্র আপনাকে মনে করিয়ে দেবে আড়াই’শ বছরের আগের কথা। সত্যি কথা হচ্ছে, একটি প্রাচীন শহর বা নদীবন্দর চেনার আনন্দের কোনও তুলনাই হয় না। ময়মনসিংহ ব্রিজ বা গৌরীপুর শহর থেকে যে কোন গাড়ী দিয়ে সাহেব কাচারীতে (রাজগঞ্জ) সহজে আসা যায়। এখান থেকে রাঘুবপুরে যাওয়া যায় হেঁটেই। রাঘুবপুরের মরা গাঙ এক সময়ে দুই-তিন কিলোমিটার প্রশস্তের সোহাই নদী বর্তমানে ধান ক্ষেত, বিল, জলাশয় বা ছোট ছোট অনেক পুকুর। এমনকি নতুন নতুন বসতি হয়েছে। সেখানে গেলে আপনাকে মনে করিয়ে দেবে দুই-আড়াই’শ বছর আগের কথা।
সোহাই নদীর স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন ঘটনার মনের অঙ্কিত চিত্র যেমন - এই নদীর ভূমিকা ছিল অপরিসীম। নদীপথ ব্যবহার করে ইউরোপীয় বণিক ও সওদাগর ভ্রমণ করেছেন বিভিন্ন স্থান। এর দুই তীরে দেখছেন অসংখ্য বৃক্ষরাজী আর সুদৃশ্য চিত্রা হরিণের দল। রাঘুবপুরের বিখ্যাত নৌবন্দর রাজগঞ্জ এবং স্থলপথে সাহেব কাচারী নামে পরিচিত। রাজগঞ্জে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যকুঠি ও কালেক্টর অফিস ছিল। তাই লোকমুখে সাহেব কাচারী।
সোহাই নদীর পশ্চিম পাড়ে সাহেব কাচারীর পূর্ব পাড়ে গাজীপুর এবং দক্ষিনে ব্রহ্মপুত্র ছিল। তখন ব্রহ্মপুত্র নদের প্রশস্ত ছিল ২০ থেকে ২২ কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্র নদীতে ছিল অনেক দ্বীপ ও চর। তাই সোহাই নদীর একটি নালা মোদ্দেরগঞ্জ (উচাখিলা) এর সন্নিকটে ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলিত হয়েছিল। সাহেব কাচারী এবং গাজীপুরে মাঝে সোহাই নদীতে অনেক কুড় ছিল।
ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদের জরিপের উদ্দেশ্যে ২২ আগস্ট ২০২০ ইং তারিখে গাজীপুর, রাঘুবপুর ও সাহেব কাচারী এলাকা পরিদর্শন করা হয়। লোকমুখে জানা যায়, পাকিস্তান আমলে শম্ভুগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ রোড করার সময়ে গাজীপুর হতে সাহেব কাচারী পর্যন্ত সোহাই নদীর কুড়ের জন্য রাস্তাটি সাপের মত আঁকাবাঁকা করা হয়েছিল। বর্তমানে সেখানে কোন কুড় নেই। এই আঁকাবাঁকা রাস্তার জন্য প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকের প্রাণ কেঁড়ে নিচ্ছে। সত্যি কথা হচ্ছে, আগে নিতো জলে, এখন নিচ্ছে স্থলে। ধারণা করা হচ্ছে, শত শত বছর আগে কুড়ের মধ্যে নৌকায় ডুবে অনেকের প্রাণ কেঁড়ে নিয়েছিল।
গাজীপুর:
গাজীপুর ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার ৯নং ডৌহাখলা ইউনিয়নের অন্তর্গত একটি ঐতিহাসিক গ্রাম। গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড হতে দক্ষিন দিয়ে একটি রাস্তা ডৌহাখলা বাজার, মোদ্দেরগঞ্জ (উচাখিলা) হয়ে নান্দাইল উপজেলার মধুপুরের চৌরাস্তার সাথে মিলিত হয়েছে। এক সময়ে সোহাই নদীর পূর্ব পাড়ে গাজীপুর এবং দক্ষিনে ব্রহ্মপুত্র ছিল। গাজীপুরে সোহাই নদীর একটি উপনদী তাতকুড়ায় লংকা নদীর সাথে মিলিত হয়ে বোকাইনগর হয়ে সুরাইয়া এবং ভুরুঙ্গা নদীর সাথে মিলিত হয়েছিল।
গাজীপুরের আশেপাশে কিছু জায়গায় এখনও ইতিহাসের গন্ধ লেগে আছে। এখানে প্রত্ননিদর্শন হিসেবে চারটি ইতিহাসের শেকড় রয়েছে। প্রত্ননিদর্শনগুলো বর্তমানের মানুষকে নিয়ে যায় অতীত ইতিহাসের কাছে। এজন্য প্রত্ননিদর্শন হলো 'ইতিহাস ঐতিহ্যের শেকড়'। গাজীপুরের সন্নিকটে মুঘল ও পাঠান আমলের ভবের কাচারী যা ডৌহাখলা জমিদারের আমলে এটি কাচারী ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এর পাঁচশ গজ পশ্চিমে রয়েছে চিকন বা ছোট ছোট ইট দ্বারা নির্মিত একটি প্রাচীন ঘর। পূর্বে আরও ঘর ছিল বলে জানা যায়।
গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড হতে দুই কিলোমিটার দক্ষিনে ডৌহাখলা বাজার। এর পাশে বিদ্যমান ইংরেজ আমলের জমিদার বাড়ীর অবশিষ্টাংশ। তাছাড়া কলতাপাড়া বাসস্ট্যান্ড এর উত্তরে রয়েছে মুঘল বা পাঠান আমলের পরিত্যক্ত গুজি খাঁর বাংলো বাড়ি যা লোকমুখে গুজু মোড়লের অভিশপ্ত বাড়ি হিসেবে পরিচিত। গাজীপুরে কিছু জায়গা নিয়ে আফগান সেনা ও গাজীদের প্রতিকৃতি এবং ইতিহাসের চারটি শেকড়ের প্রতিকৃতি তৈরী করে কিছু ঐতিহাসিক মনুমেন্টের প্রয়োজন মনে করছেন বর্তমান প্রজন্মরা।
অনেক স্মৃতির সাক্ষী প্রাচীন নৌবন্দর ও আফগান সেনাদের ফাড়ি গাজীপুর। ধারণা করা হচ্ছে, মুঘল আমলে ঈশা খাঁর নেতৃত্বধীন দীর্ঘ ভাটী যুদ্ধের কিছু কিছু খণ্ডযুদ্ধে আফগান সেনারা জয়লাভ করেছিলেন। মুঘল বাহিনী জলের চেয়ে স্থলে খুব শক্তিশালী ছিল। তাই তারা বোকাইনগরে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। এ যুদ্ধে জীবিত অবস্থায় আফগান সেনারা গাজী উপাধি লাভ করেছিনে। তখন জায়গাটির নাম রাখা হয় গাজীপুর। পরবর্তীতে ঈশা খাঁর তৃতীয় শক্তিধর, বারো ভুইয়ার নবাব সমতুল্য জমিদার, মুঘল আমলের ইতিহাসখ্যাত তিনটি বইয়ের উল্লেখিত বীরযোদ্ধা আফগান হিরো খাজা উসমান খাঁ উত্তর উরিষ্যা থেকে বোকাইনগরে আসেন। তখন জলদুর্গের প্রতিটি ফাড়িকে আরও শক্তিশালী করা হয়। ১৬০৯ সালে আফগান হিরো খাজা উসমান খাঁ বোকাইনগর ত্যাগ করার পর অত্র পরগনার সব কিছু মুঘলের অধীনে চলে যায়।
পরানগঞ্জ (Parangunge):
পরানগঞ্জ ময়মনসিংহ জেলার সদর উপজেলার অন্তর্গত একটি ঐতিহাসিক ইউনিয়ন। জেমস রেনেলের মানচিত্রে কাশেরগঞ্জের পশ্চিমে এবং ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তর-পূর্ব দিকে পরানগঞ্জ অবস্থিত। ইতিহাস অনুসন্ধান করলে জানা যায়, ময়মনসিংহের প্রাচীন শহর বাইগন বাড়ী। ব্রহ্মপুত্র নদের এপাড় বাইগন বাড়ী আর ওপাড় পরানগঞ্জ। তাই বাইগন বাড়ীর জন্য পরানগঞ্জের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছিল। জেমস রেনেলের বইয়ের মানচিত্রের বিবরণ থেকে পাওয়া যায় যে, কলকাতা থেকে পরানগঞ্জ পর্যন্ত নদী পথের দূরত্ব ৪৯৮ মাইল এবং বাইগন বাড়ী পর্যন্ত নদী পথের দূরত্ব ৪৯৪ মাইল।
কাশেরগঞ্জ (Cassergunge):
কাশেরগঞ্জ ছিল বিখ্যাত নদীবন্দর ও ব্যবসা কেন্দ্র। কাশবন বা কাশের চর থেকে কাশেরগঞ্জের উৎপত্তি। জেমস রেনেলের মানচিত্রে পরানগঞ্জ ও রাঘবপুরের মধ্যে এবং ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তর-পূর্ব দিকে কাশেরগঞ্জ অবস্থিত। ইতিহাস অনুসন্ধান করলে জানা যায় যে, দেশ-বিদেশের অনেক বণিক ও ইংরেজরা দল বেঁধে এই অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে আসেন। তখন পাট, ধান ও মসলার জন্য বিখ্যাত ছিল এই অঞ্চল। এ থেকে স্পস্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে যে, শম্ভুগঞ্জের পূর্ব নাম ছিল কাশেরগঞ্জ। কাশেরগঞ্জ নাম পরিবর্তন করে প্রথমে রাখা হয়েছিল কিশোরগঞ্জ। পরবর্তীতে নামকরণ করা হয়েছিল শম্ভুগঞ্জ। ময়মনসিংহ অঞ্চলে এই নৌবন্দর ও বানিজ্য কেন্দ্রটি অন্যতম প্রচীন। শম্ভুগঞ্জের পাশ দিয়ে বয়ে গেয়েছিল মূল ব্রহ্মপুত্র। শোনা যায় এখানে চরগুলোতে অনেক ঐতিহ্যবাহী কাশবন ছিল। তখন মানুষ ডাকতো কাশের চর বলে। তাছাড়া গৌরীপুরে ১২টি জমিদার বাড়ি ছিল। জমিদারের ১২টি এস্ট্যাট ছিল বিভিন্ন জায়গায়। প্রতিটি এস্ট্যাটের পৃথক নাম ছিল। যেমন গোলকপুর এস্ট্যাট। গোলকপুর এস্ট্যাটের জমিদার ছিলেন শ্যামচন্দ্র বাহাদুর চৌধুরী এবং তার একমাত্র ছেলে শম্ভুচন্দ্র রায় চৌধুরী। তাদের নাম দিয়ে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হয় শম্ভুগঞ্জ বাজার এবং শ্যামগঞ্জ বাজার।
মুদ্দেরগঞ্জ (Moddergunge):
মুদ্দেরগঞ্জ ছিল বিখ্যাত নদীবন্দর ও ব্যবসা কেন্দ্র। বাংলার প্রধান অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর মধ্যে এই বন্দরটি প্রাচীন ও মধ্যযুগেই বহির্বিশ্বে বেশ পরিচিত ছিল। জেমস রেনেলের মানচিত্রে মূল ব্রহ্মপুত্র ও সোহাই নদীর সংযোগ স্থুলে মুদ্দেরগঞ্জ অবস্থিত। ১৭৮৭ সালের আগে ব্রহ্মপুত্র নদটি ২০-২২ কিলোমিটার প্রশস্ত ও খরস্রোতা ছিল। তাছাড়া মোমেনসিং ও হোসেনশাহী এই দুই পরগনার সীমায় অবস্থিত ছিল নদীবন্দরটি।
জেমস রেনেলের মানচিত্রের বিবরণ থেকে পাওয়া যায় যে, কলকাতা থেকে মুদ্দেরগঞ্জ পর্যন্ত নদী পথের দূরত্ব ৪৭৮ মাইল। ইতিহাস অনুসন্ধান করলে জানা যায়, উচাখিলার পূর্ব নাম ছিল মুদ্দেরগঞ্জ। বর্তমান উচাখিলা একটি ইউনিয়ন।
উচাখিলা ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন। ময়মনসিংহ জেলা শহর হতে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে উচাখিলা বাজার অবস্থিত। পুরাকীর্তি ও ঐতিহাসিক নিদর্শনা হিসেবে উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের থেকে মাত্র ২০০ গজের মধ্যে আট গম্বুজের পুরাতন জামে মসজিদ অবস্থিত। উচাখিলা-ঈশ্বরগঞ্জ রাস্তার উত্তর-পূর্ব পাশে গোল্লা গ্রামে একটি প্রাচীন নীল কুঠির ধ্বংশাবশেষ রয়েছে।
মধুপুর (Modupour):
মধুপুর ছিল বিখ্যাত নদীবন্দর ও ব্যবসা কেন্দ্র। বাংলার প্রধান অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর মধ্যে এই বন্দরটি প্রাচীন ও মধ্যযুগেই বহির্বিশ্বে বেশ পরিচিত ছিল। জেমস রেনেলের মানচিত্রে মূল ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে মধুপুর অবস্থিত। ১৭৮৭ সালের আগে ব্রহ্মপুত্র নদটি ২০-২২ কিলোমিটার প্রসস্থ ও খরস্রোতা ছিল। তাছাড়া হোসেনশাহী পরগনায়
অবস্থিত ছিল নদীবন্দরটি। বর্তমান মধুপুর শুধু গ্রাম, এখানে একটি বাজার আছে যা চৌরাস্তায় অবস্থিত। জেমস রেনেলের বইয়ের মানচিত্রের বিবরণ থেকে পাওয়া যায় যে কলকাতা থেকে মধুপুর পর্যন্ত নদী পথের দূরত্ব ৪৭৩ মাইল। মধুপুর ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের অন্তর্গত একটি ঐতিহাসিক গ্রাম। ময়মনসিংহ জেলা শহর হইতে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে মধুপুর বাজার অবস্থিত। পুরাকীতি ও ঐতিহাসিক নিদর্শনা হিসেবে মগটুলা ইউনিয়ন পরিষদের কাছে একটি প্রাচীন রাজবাড়ী রয়েছে।
জেনে নিন -
ময়মনসিংহ বা গৌরীপুর শহর হতে সড়কপথে যাওয়া যায় রঘুনাথপুর, গাজীপুর, মধুপুর, কেসারগঞ্জ ও মোদ্দেরগঞ্জ। ঝামেলা ছাড়া যেতে চাইলে মোটরসাইকেল বা অটোরিকশার বিকল্প নেই।
মন্তব্য করুন: