• ঢাকা

  •  মঙ্গলবার, আগস্ট ১৯, ২০২৫

জেলার খবর

বুয়েটে ৬১তম হয়েও ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিষ্ণু দাস

অনলাইন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: ১৬:১১, ২০ জুন ২০২৩

বুয়েটে ৬১তম হয়েও ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিষ্ণু দাস

পঞ্চগড়: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েটে) ৬১তম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ক ইউনিটে ৮১তম হয়েও অর্থের অভাবে ভর্তি হতে পারছেন না মেধাবী বিষ্ণু দাস। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় তার হতদরিদ্র পরিবার।

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের আরাজী সুন্দরদীঘি শিবেরহাট গ্রামের ভূমিহীন মাছবিক্রেতা জয়দেব দাসের ছেলে বিষ্ণু দাস। সে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুন্দরদীঘি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে। এরপর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ঢাকা নটেরডেম কলেজে ভর্তি হয়। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে। বিষ্ণু অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিও পেয়েছিল।

বিষ্ণুদের বাড়িতে রান্নাঘরসহ দুটি জীর্ণশীর্ণ কুড়ে ঘর। একটি ঘরে তিন ভাই থাকেন। রান্না ঘরে থাকেন বাবা-মা। আর একটি ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে থাকেন বিষ্ণুর দাদা-দাদীমা।

সোমবার (১৯ জুন) প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, বুয়েটে মেধা তালিকায় বিষ্ণুর স্থান ৬১তম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ক ইউনিটে মেধাতালিকায় ৮১তম স্থান অধিকার করে বিষ্ণু।

মেধাবী বিষ্ণু দাশ জানায়, বুয়েটে সে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (সিএসই) পড়তে চায়। কিন্তু বুয়েটে ভর্তি হওয়া ও পড়াশোনা চালিয়ে নিতে যে টাকার দরকার তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ছোট দুই ভাইয়ের মধ্যে একজন এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে আর সবার ছোটভাই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। বাবা গ্রামের বাজারে মাছ বিক্রি করে যা পান তা দিয়ে সংসার চালানোই কঠিন। তাছাড়া বৃদ্ধ দাদা, দাদীমা আছেন।

শৈশব থেকে পরিবারের দারিদ্রতা দেখে বড় হওয়া বিষ্ণু বলেন, চান্স পেয়েছি, এখন কিভাবে ভর্তি হবো, পড়াশোনা কিভাবে চালিয়ে যাবো বুঝতে পারছি না। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। স্বপ্ন ছিল বুয়েটে সিএসসিতে পড়ার। জানিনা এ স্বপ্ন পূরণ হবে নাকি-স্বপ্নই থেকে যাবে।

বিষ্ণুর সাফল্যগাথা নিয়ে সুন্দরদিঘী উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হরিশ চন্দ্র রায় বলেন, বিষ্ণু আমাদের বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তার এই সাফল্যে আমরা গর্বিত। বিষ্ণু দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার বাবা একজন মাছ বিক্রেতা। আড়তে মাছ কিনে খুচরা বিক্রি করেন। আমরা স্কুল ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছি। এখন বুয়েটে চান্স হয়েছে। এটা আমাদেরও গর্বের বিষয়। সবাই যদি একটু সহযোগিতা করে হয়ত সে অনেক দূরে যাবে।

একই গ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক বিকাশ চন্দ্র রায় জানান, বিষ্ণু ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। এসএসসি পাশের পর এক প্রকার জোর করেই তাকে নটেরডেমে ভর্তি করাই। সকলের সহযোগিতায় সে সফল হয়েছে।

বিষ্ণুর বাবা জয়দেব দাস ছেলের ফলাফল শুনে সারারাত দুশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারেননি। মঙ্গলবার সকালে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, আর পারছি না। আড়তে মাছ নিয়ে আর কয় টাকাই বা হয়। সাতজনের সংসার। নুন আনতে পানতা ফুরায় অবস্থা। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ছেলে এতদূর গেছে। [প্রতিবেদন: দেশ রূপান্তর]

জুন ২০, ২০২৩

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: