• ঢাকা

  •  শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

বাংলাদেশ

খাজা উসমান খাঁ পদক পেলেন ১৫ গুণী ব্যক্তিত্ব

বিশেষ প্রতিনিধি:

 আপডেট: ২১:৫৫, ৩০ অক্টোবর ২০২২

খাজা উসমান খাঁ পদক পেলেন ১৫ গুণী ব্যক্তিত্ব

ছবি: সময়বিডি.কম

ময়মনসিংহ: সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ও গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেশের ১৫ গুণী ব্যক্তিত্ব পেয়েছেন খাজা উসমান খাঁ সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড।

রবিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের শহীদ শাহাবুদ্দিন মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই গুণীজনদের হাতে পদক ও সনদপত্র তুলে দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ ড. একেএম আব্দুর রফিক।

অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তরা হলেন, শিল্পকলা, শিক্ষা, ভাষা ও সাহিত্যে - গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়েজী, কবি ফাতেমা ইসরাত রেখা, ননী গোপাল সরকার, আফেন্দি নূরুল ইসলাম, সত্যজিৎ বিশ্বাস, নাজমা মমতাজ, মোছা. হাজেরা বেগম, গবেষণায়- ড. মো. আব্দুল মালেক, জাহাঙ্গীর আলম জাহান; সাংবাদিকতায়- আতাউল করিম খোকন, মো. শাহজাহান, এএসএম হোসাইন শাহীদ, এম মুখলেছুর রহমান এবং সমাজসেবায় পেয়েছেন মুহাম্মদ ফজলুল হক ও মুহাম্মদ আব্দুর রউফ লিটন।

অনুষ্ঠানে অ্যাওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রায়হান উদ্দিন সরকার বলেন, বিজয়ীদের নাম আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। আজ (রবিবার) আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৯ ও ২০২১ সালে অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়েছে।

অ্যাওয়ার্ড কমিটির সভাপতি প্রফেসর ইঞ্জিনিয়ার এম এ জিন্নাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র শামীমা খানম, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ ড. একেএম আব্দুর রফিক, শম্ভুগঞ্জ জিকেপি কলেজের নির্বাহী পরিচালক লায়ন ড. মো. সিরাজুল ইসলাম, সাপ্তাহিক রাজগৌরীপুরের উপদেষ্টা সম্পাদক আজম জহিরুল ইসলাম, ক্রিয়েটিভ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ আলম ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রায়হান উদ্দিন সরকার।

খাজা উসমান খাঁন লোহানী সমধিক পরিচিত খাজা ওসমান নামে। তিনি ছিলেন উত্তর-পূর্ব বাংলার একজন পাঠান সর্দার এবং যোদ্ধা। বারো ভূঁইয়াদের একজন হিসেবে তিনি উত্তরবঙ্গের বৃহত্তর ময়মনসিংহ এবং পরবর্তীতে দক্ষিণ সিলেটে জমিদারি করেন। 

তিনি ছিলেন মানসিংহ এবং মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী এবং বাংলার সর্বশেষ আফগান সর্দার ও শাসক। তার পরাজয়ের ফলে বাকী সকল পাঠানকে আত্মসমর্পণ করতে হয় এবং সিলেট অঞ্চলটি সুবাহ বাংলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাকে বাংলার ইতিহাসের সবচেয়ে রোমান্টিক ব্যক্তিত্ব বলে মনে করা হয়।

উসমানের পিতার নাম খাজা ঈসা খান মিয়াখেল। উসমানের চাচা কুতলু খান লোহানী ছিলেন বাংলার সুলতান সুলায়মান খান কররানী কর্তৃক নিয়োজিত পুরীর গভর্নর। ১৫৯০ সালে কুতলু খাঁ'র মৃত্যুর পরে নাসির খান লোহানী মুঘলদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করায় এই অঞ্চলেল পাঠানদের মধ্যে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। নাসির দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছরের মাথায় মুঘল সাম্রাজ্যের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে বিহারের তৎকালীন গভর্নর মানসিংহ তার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। এতে নাসির পরাজিত হন। 

১৫৯৩ সালে উসমান পূর্ব দিকে অভিযান চালিয়ে ভুশনা পর্যন্ত চলে যান যেখানে তিনি ১১ ফেব্রুয়ারি চাঁদ ইবনে কেদার রায়কে পরাজিত করেন। এখানে, তিনি ভাটি অঞ্চলের শাসক ঈসা খানের সাথে একটি জোট গঠন করেন, যার নেতৃবৃন্দ পরবর্তীতে বারো ভূঁইয়া নামে পরিচিতি পায়।

ঈসা খাঁর সাথে কাজ করে, উসমান বৃহত্তর ময়মনসিংহ জয় করেন। তিনি তার রাজধানী গৌরীপুরে বোকাইনগর দুর্গ শহরটি তৈরি করতে সক্ষম হন এবং এর মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব বাংলার উপর তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। অল্প সময়ের জন্য পাঠানরা উত্তর ওড়িশায় ফিরে আসে। সম্রাট আকবরের মৃত্যুর পরে, ১৫৯৯ সালে উসমান বোকাইনগর দুর্গ পুনর্নির্মাণ করে একে ২০ হাজার সৈন্যের একটি শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করতে সক্ষম হন। উসমান হাসানপুর এবং এগারোসিন্দুরে আরও দুটি দুর্গ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ব্রহ্মপুত্র নদী ছিল পশ্চিমের মুঘল অঞ্চল এবং উসমানের অঞ্চলের মাঝে সীমারেখা।

১৫৯৬ সালে উসমান শ্রীপুরের চাঁদ রায়কে পরাজিত করেন। তারপর, ১৬০২ সালে উসমান ব্রহ্মপুত্র অতিক্রম করে ও মুঘল থানাদার আলাপসিংহ, সজওয়াল খান ও বাজ বাহাদুর কালমাকদেরকে হারিয়ে দেন।

১৬১২ সালের মার্চ মাসে এক যুদ্ধে তিনি নিহত হন। 

অক্টোবর ৩০, ২০২২

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: