• ঢাকা

  •  শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগ জনগণকে দেওয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী কাজ করে: শেখ হাসিনা

অনলাইন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: ১৭:৪১, ১৪ জানুয়ারি ২০২৩

আওয়ামী লীগ জনগণকে দেওয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী কাজ করে: শেখ হাসিনা

ঢাকা: জনগণকে দেওয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সবসময় জাতির কল্যাণে কাজ করে এবং দেশের মানুষ এর সুফল ও পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভায় সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি উল্লেখ করেন, সবসময় তারা জনগণকে দেওয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নির্বাচনী ইশতেহারকে স্মরণ রেখে জাতীয় বাজেট প্রণয়ন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের যে আমুল পরিবর্তন ঘটেছে তা অনেকেই মেনে নিতে পারছে না। নানা ধরনের কথা রটায় কিন্তু মুলত একটা পরিবর্তন যে এসেছে মানুষের জীবনযাত্রায়। আর তাছাড়া রাস্তা-ঘাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থারতো আমরা প্রভূত উন্নতি করেছি। তারপরও এসব উন্নতিও অনেকে চোখে দেখেও না দেখার ভান করে, স্বীকার করতে চায় না, করতে চাইবেও না। কিন্তু যেটা আমি সবসময় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা করে সে ওয়াদা রক্ষা করে।

সরকারপ্রধান বলেন, প্রত্যেক ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে আমরা ঘর করে দিচ্ছি, আমাদের কথা ছিল প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা আলো জ¦ালাবো সেটাও আমরা পেরেছি।

তিনি বলেন, দেশে এর মধ্যে দারিদ্রের হার অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে এই হার আরো ৩ থেকে ৪ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হতো।

সবাই মিলে বিশ্বমন্দা মোকাবেলা করতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র ঋণের বোঝা থেকে মানুষকে মুক্ত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। দেশের কোথায় কি দুর্নীতি হয়েছে সে তথ্য দিতেও জাতীয় সংসদে আহ্বান জানানো হয়েছে। কাজেই শুধু মুখে দুর্নীতির কথা বললেই হবে না, সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ দিলে সরকার ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু এখন এমন লোকেদের কাছে দুর্নীতির কথা শুনতে হয় যারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তাদের আমলে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা করতে গিয়ে গরীব মানুষের ওপর এমন চাপ, যাদের সুদ দিতে গিয়ে ঘর-বাড়ি বিক্রি করে এলাকা ছেড়ে চলেই যেতে হয়েছে অথবা আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু এই গরীব মানুষের টাকা দিয়েই বিদেশে নামধাম করে তারা ভালোই আছে, প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগও করছে। এই টাকাতো গরীবের রক্তের কামানো টাকা, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের পতিত জমি কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বাড়ানোয় তার আহ্বান পূণর্ব্যক্ত করে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের দেশেও যারা একেবারে নির্দিষ্ট বেতনে চলতে হয় তাদের জন্য কষ্ট হচ্ছে। সেটা আমরা বুঝি। সেই জন্য বিদেশ থেকে অনেক টাকা খরচ করে খাবার কিনে নিয়ে এসে ভর্তুকি মূল্যে সেটা দিচ্ছি। টিসিবি’র কার্ডের মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে আপদকালীন সময়ে ভোজ্য তেল, চিনি, ডালসহ নিত্যপণ্য যেন ক্রয় করতে পারে ন্যায্যমূল্যে সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পাশাপাশি, খাদ্য উপৎপাদন বাড়ানো জন্য তার সরকার কৃষিতেও ভর্তুতি অব্যাহত রেখেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের তরতারি এখন ৭০টির মত দেশে রপ্তানি হচ্ছে। শরিয়তপুরের যে সবজি হচ্ছে তা সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছে। এভাবে উদ্যোগ নিয়ে আমরা করতে পারি। কাজেই সেভাবেই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চিন্তা আমাদের করতে হবে।

তিনি বলেন, কৃষকদের গুরুত্ব দিয়ে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং কৃষি সমবায়ে মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বানের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বৈজ্ঞানিক তৎপরতা চালানোর’ কথা জাতির পিতা বলে গেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারে আসার পর গবেষণায় সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। ’৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকে গবেষণায় পৃথক বরাদ্দ দিয়েছি। যার জন্য বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আর তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে অনেক অনাবাদী জমিতে আবাদ শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী উদাহারণ দেন, তার এলাকা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া এবং কোটালিপাড়ায় প্রায় ১০ হাজার একর অনাবাদী জমি তিনি আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছেন, কৃষিমন্ত্রণালয়ের অনাবাদী জমিকে চাষের আওতায় আনার যে প্রকল্প তার অতিরিক্ত হিসেবে।

তিনি বলেন, তার সরকার সামাজিক নিরপত্তাবলয়ের কর্মসূচির পরিধি বৃদ্ধির পাশাপাশি জনগণের ক্ষুদ্র সঞ্চয় সৃষ্টিতে ট্রেনিং, টাকা এবং সমবায় গড়ে দেওয়ার মাধ্যমে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এজন্য ‘আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প’ যেমন বাস্তবায়নাধীন রয়েছে তেমনি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক করে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, তার সরকারের দুই বছরের সহযোগিতায় এক সময় বিনিযোগকারি ব্যক্তির হাতে মূলধন হবে, সে সময় প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট না থাকলেও সে ব্যাংকে জমাকৃত টাকা দিয়ে তার ক্ষুদ্র ব্যবসা চালাতে পারবে। অর্থাৎ ক্ষুদ্র ঋণে যে উচ্চহারে সুদের বোঝা টানতে হয় সে সুদের বোঝা টানা থেকে তাদের মুক্ত করে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে নিয়ে গিয়ে তারা যেন তাদের নিজের পায়ে দাঁড়োতে পারে সরকার সে ব্যবস্থাটাই করেছে।

পাশাপাশি, যুব সমাজের জন্য সরকার কর্মসংস্থান ব্যাংক করেছে যেখান থেকে বিনা জমানতে তারা ২ লাখ পর্যন্ত টাকা নিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ পাচ্ছে এবং বিদেশগামীদের জন্য সরকার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকও করেছে, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার এভাবেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো পরিচালনার ফলে আজকে বাংলাদেশে বিরাজমান দারিদ্র ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামাতে সক্ষম হয়েছে এবং হতদরিদ্র ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে এবং মাথাপিছু আয়ও বাড়াতে পেরেছে এবং গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমানেরও উন্নতি ঘটিয়েছে।

পরে প্রধানমন্ত্রী ‘ভেঙ্গেছে দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।

জানুয়ারি ১৪, ২০২৩

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: