• ঢাকা

  •  মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪

বাংলাদেশ

নেত্রকোনায় বাড়ি বাড়ি পানি পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ

নিজস্ব সংবাদদাতা

 প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ১৪ মে ২০১৮

নেত্রকোনায় বাড়ি বাড়ি পানি পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ

নেত্রকোনা: পানির তীব্র সংকটে নেত্রকোনা শহরে চলছে হাহাকার। কালবৈশাখীর ধ্বংসলীলার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সংযোগ চালু না হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় জেলা শহরের পানি সরবরাহ কার্যক্রম।

এদিকে পানি না থাকায় থেমে যায় মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্ম। খাবার পানির অভাবে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে।

এ পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়াতে জেলার বিভিন্ন বাসাবাড়িতে পিকআপ ভ্যানে করে ট্যাংক ভর্তি পানি পৌঁঁছে দিচ্ছে পুলিশ।

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) এসএম আশরাফুল আলম জানান, রোববার (১৩ মে) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকার সহস্রাধিক বাসাবাড়ি, সরকারি হাসপাতাল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মাইকিং করে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়েছে।

মানবিক মূল্যবোধ থেকে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব চৌধুরীর নির্দেশে নিরলসভাবে এই কাজটি করে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। পাশাপাশি অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য দিয়ে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে জেলা পুলিশ।

সোমবারেও (১৪ মে) যদি পানি সরবরাহ স্বাভাবিক না হয় তবে জেলা পুলিশ যতদূর সম্ভব পানি সরবরাহ করবে বলেও জানান তিনি।

নেত্রকোনার প্রবীণ আইনজীবী নূর ই এলাহি খান জানান, শুক্রবার (১১ মে) সকালে নেত্রকোনার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে গাছপালা ভেঙে জেলায় পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শুক্রবার থেকে রোববার রাত পর্যন্ত স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগ বিদ্যুত সরবরাহ চালু করতে না পারায় মানুষ পানি সংকটে পড়েন। বাজারে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেয়। বিত্তশালীরা জেনারেটর কিনে বা ভাড়ায় এনে পানি উত্তোলন করে খেতে পারলেও সাধারণ মানুষের অবস্থা চরম আকার ধারন করে। এ পরিস্থিতিতে জেলা পুলিশ পানি বিতরণের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।

দুর্যোগপূর্ণ এ পরিস্থিতিতে জনপ্রতিনিধিদের কাছে যে প্রত্যাশা ছিলো, তা পুলিশ পূরণ করে দিয়েছেন বলে অভিমত প্রকাশ করেন মোক্তারপাড়া এলাকার বাসিন্দা কম্পিউটার প্রশিক্ষক প্রসেনজিৎ রাজন। তার দাবি, সবকিছু তছনছ করে দেওয়া এ ঝড়ের তিনদিন পার হয়ে গেলেও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা ছিলো হতাশাজনক।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১১মে) সকালে জেলা সদরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড়ে ঘর চাপা পড়ে একজন নিহত ও শিশুসহ প্রায় শতাধিক আহত হন। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসহ তিন সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) মঈনউল ইসলাম জানান, ঝড়ে জেলার বিভিন্ন গ্রামের ৫ হাজার হেক্টর ফসল নষ্ট হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে ১২০টি। এরমধ্যে পিডিবির ৭০টি ও পল্লী বিদ্যুতের ৫০টি। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৫ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।  এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের পরবর্তী সহায়তা দিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলেও জানান ডিসি।

মে ১৪, ২০১৮

মন্তব্য করুন: