• ঢাকা

  •  শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

অপরাধ

ফেলে যাওয়া ব্যাগ থেকেই মেছের আলী হত্যার রহস্য উদঘাটন

অনলাইন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: ১০:০৮, ৬ জুন ২০২৩

ফেলে যাওয়া ব্যাগ থেকেই মেছের আলী হত্যার রহস্য উদঘাটন

ঢাকা: রাজধানীর খিলক্ষেতে একটি ফেলে যাওয়া ব্যাগের সূত্র ধরে মেছের আলী হত্যার রহস্য উদঘাটন করে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে খিলক্ষেত থানা পুলিশ।

গত ৪ জুন রাতে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার মাওনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতের নাম মোঃ রমজান আলী।

গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম পিপিএম সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৩ মে বিকালে খিলক্ষেত থানার বরুয়ার বোয়ালিয়া খাল সংলগ্ন আশিয়ান হাউজিং প্রজেক্টের বালুর চরে মেছের আলীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়। মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থলে একটি ব্যাগ পাওয়া যায়। সেই ব্যাগ থেকে লোহার কাচি, কম্বলসহ কিছু নতুন-পুরনো কাপড় ও মিনা নামে একজনের জন্ম নিবন্ধন ও টিকা কার্ড পাওয়া যায়।

অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, প্রাপ্ত ব্যাগ ও ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। জন্ম সনদের প্রেক্ষিতে মিনাকে ও তার স্বামী শাহাবুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মিনা ও তার স্বামী শাহাবুদ্দিন জানায়, ঈদুল ফিতরের কয়েক দিন আগে শাহাবুদ্দিন তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় যাওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর রেল স্টেশনে উপস্থিত হন। সে সময় রমজান আলী নামে এক বয়ষ্ক লোক তাকে এক সঙ্গে নেত্রকোনায় যাওয়ার কথা বলেন। রমজান আলী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা না করে কারওয়ান বাজার থেকে বাসে করে যাওয়া বিকল্প রাস্তার কথা বলেন। শাহাবুদ্দিন সরল বিশ্বাসে রমজান আলীর সাথে কারওয়ান বাজার যান। 

তিনি বলেন, সেখানে গিয়ে রমজান আলী চা পান করার কথা বলে শাহাবুদ্দিনকে। রজমান আলী চা পান করার পর শাহাবুদ্দিনকে তার কাছে থাকা ব্যাগ ও টাকা তাকে দিতে বলেন। শাহাবুদ্দিন চারশত টাকা ও তার ব্যাগটি রমজান আলীর কাছে দেন। রমজান আলীর মোবাইল ফোন থেকে শাহাবুদ্দিন তার স্ত্রীকে জানান, সে রমজান আলীর সাথে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছে, সে একই এলাকায় যাবেন। শাহাবুদ্দিন চা পান করার ফলে তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে রমজান আলী ব্যাগ ও টাকা নিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত ব্যাগটি শাহাবুদ্দিনকে দেখানো হলে তিনি তার ব্যাগটি সনাক্ত করেন।

অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, গত ২০ মে মেছের আলী বাসা থেকে বের হলে ওইদিন রাতে বিমানবন্দর রেলস্টেশনে রমজান আলীর সাথে পরিচয় হয়। অটোরিকশাযোগে রমজান আলী ও মেছের আলী, বড়ুয়া রেলগেট এলাকায় আসেন। তখন রমজান আলীর পিছনে একটি ব্যাগ ঝুলানো ছিল। ওই ব্যাগের ভিতরেই শাহাবুদ্দিনের নিকট হতে নেওয়া ব্যাগটি ছিল। 

মেছের আলীকে নিয়ে রমজান আলী রেলগেটের সামনের এক দোকানে চা পান করেন। চা পান করার সময় মেছের আলীর নিকট ৪ হাজার টাকা রমজান আলী দেখতে পায়। এরপর রমজান আলী কৌশলে মেছের আলীর চায়ের মধ্যে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দেয়, বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, নিহত মেছের আলীর কাছে থাকা ৪ হাজার টাকা নেওয়াই রমজান আলীর মূল উদ্দেশ্য ছিল। মেছের আলী ও রমজান আলী চা পান করার পর বরুয়ার বোয়ালিয়া খাল সংলগ্ন আশিয়ান হাউজিং প্রজেক্টের বালুর চরে উপস্থিত হয়। কিছুক্ষণ পর মেছের আলী অজ্ঞান হয়ে গেলে রমজান আলী মেছের আলীকে একটু দূরে বড় বড় ঘাসযুক্ত জায়গায় রেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। রমজান আলী মনের অজান্তে ব্যাগটি ঘটনাস্থলে রেখে চলে যায়। এই ব্যাগের সূত্র ধরেই অপরাধীকে সনাক্ত করা হয়।

খিলক্ষেত থানায় রুজুকৃত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার রমজান আলীকে আদালতে পাঠানো হলে তিনি দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

জুন ৬, ২০২৩

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: