• ঢাকা

  •  শনিবার, মে ৪, ২০২৪

অর্থ ও কৃষি

রাজস্ব জমা ও বিক্রিতে কেরুর রেকর্ড

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:

 প্রকাশিত: ১৭:০৩, ৪ আগস্ট ২০২৩

রাজস্ব জমা ও বিক্রিতে কেরুর রেকর্ড

ছবি: সময়বিডি.কম

চুয়াডাঙ্গা: দেশে মদ বিক্রি ও রাজস্ব জমা দেওয়ার রেকর্ড করেছে দেশীয় মদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। গেল অর্থবছরে কোম্পানিটি ৫৯ লাখ ৬৭ হাজার প্রুফ লিটার মদ বিক্রি করেছে। কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত অর্থবছরে প্রায় ৪৩৯ কোটি টাকার মদ বিক্রি করেছে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ডিষ্টিলারি ইউনিট। রাজস্ব ও লোকসান সমন্বয় করে এ বছর মুনাফা অর্জন করেছে ৮০ কোটি টাকার বেশি। যা গত অর্থ বছরের চেয়ে প্রায় ১৩ কোটি টাকা বেশি। একইসঙ্গে এ বছর প্রতিষ্ঠানটি সরকারি কোষাগারে ১৪৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব জমা দিয়েছে।

কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, চলতি অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের বাজারে মদের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় কেরুর মদ বিক্রিও বেড়েছে কয়েক গুণ। চিনি উৎপাদনের পর মোলাসেস পাওয়া যায়। ডিস্টিলারি বিভাগের মদ উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল মোলাসেস (চিটাগুড়)। মোলাসেস কয়েকটি ধাপে প্রক্রিয়াজাত করে মদ উৎপাদন হয়। মোলাসেস থেকে বাংলা মদ, বিলেতি মদসহ অন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ তৈরি করা হয়। 

কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে ৯টি ব্র্যান্ডের বিলেতি মদ উৎপাদন করা হয়। এগুলো হলো - ইয়েলো লেবেল, মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্র্যান্ডি, চেরি ব্র্যান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, জারিনা ভদকা, রোসা রাম ও ওল্ড রাম।

২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ডিস্টিলারি বিভাগ থেকে ৫৯ লাখ ৬৭ হাজার প্রুফ লিটার মদ উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৪২ হাজার ৬১৯ লিটার বিলেতি মদ এবং বাংলা মদ ৩২ লাখ ৮০ হাজার ২২০ লিটার। এ ছাড়াও ডিনেচার স্পিরিট, রেক্টিফাইড স্পিরিটসহ অন্য প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদন হয়েছে।

উৎপাদিত মদের মধ্যে দেশের বাজারে বিক্রি হয়েছে ৫৭ লাখ ৭৩ হাজার প্রুফ লিটার। মোট ৫৯ লাখ ৬৭ হাজার লিটার মদ বিক্রি করে আয় হয়েছে ৪৩৯ কোটি টাকা। চিনিকল কর্তৃপক্ষ সরকারি কোষাগারে রাজস্ব জমা দিয়েছে ১৪৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ডিস্টিলারি থেকে লাভ হয়েছে ১৫২ কোটি টাকা। 

এর আগে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মদ উৎপাদন করে ৫৩ লাখ ৭৯ হাজার প্রুফ লিটার। যার বাজার মুল্য ৩৬৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। ওই অর্থবছরে সরকারি কোষাগারে রাজস্ব জমা দেয় ১১৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ডিস্টিলারির লাভ হয় ১৩২ কোটি টাকা।

এদিকে ৩০ বছর পর কেরুর ৯টি কৃষি খামার ও একটি পরীক্ষামূলক খামার থেকে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে লাভ হয়েছে ২০ লাখ টাকা। খামারগুলো থেকে বীজ আখ উৎপাদন করা হয়। জৈব সার কারখানায় ১ হাজার ৬০২ মেট্রিকটন সার উৎপাদন হয়েছে। বিক্রি হয়েছে ৯৫৮ মেট্রিকটন। 

এ বছর ৩ হাজার ৮০২ একর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। কেরুর নিজস্ব খামারে আখ রয়েছে ১ হাজার ১৫৩ একর। আর কৃষকরা চাষ করছেন ২ হাজার ৬৪৯ একর জমিতে। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে প্রতি মণ আখ কেরু ক্রয় করবে ২৪০ টাকা দরে।

কেরুর জমিতে আখ চাষের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা হয় আলু, মসুর, সরিষা, ধনিয়া ও মিষ্টকুমড়া। চিনি, পরীক্ষামূলক খামার, ডিস্টিলারি, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ভিনেগার ও জৈব সার উৎপাদন করে থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত এ কোম্পানি। দেশে কেরুর ১৩টি ওয়্যারহাউস ও ৩টি বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে।

কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানান, চিনিকলের লোকসান সমন্বয় করে এ বছর ৮০ কোটি টাকা লাভ হয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় ১৩ কোটি টাকা বেশি। রেকর্ড পরিমাণ রাজস্বও জমা দেওয়া হয়েছে। আখ উৎপাদন ও মিলের উৎপাদন বাড়াতে আমরা নিয়মিত কাজ করছি। কৃষকদের আখ চাষে আগ্রহী করে তুলতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আখের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। কৃষি খামার ৩০ বছর পর লাভের মুখ দেখলো। 

গত অর্থবছরে মদ উৎপাদন ও বিক্রি অনেক বেশি হয়েছে বলেও জানান কেরুর এ কর্মকর্তা।

আগস্ট ৪, ২০২৩

সালাউদ্দীন কাজল/এবি/

মন্তব্য করুন: