• ঢাকা

  •  শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

প্রযুক্তি

৫০ বছর পর চাঁদের মাটিতে জন্মাল গাছ

নিউজ ডেস্ক:

 প্রকাশিত: ১১:৩০, ১৪ মে ২০২২

৫০ বছর পর চাঁদের মাটিতে জন্মাল গাছ

অবশেষে সফলতা আসলো। পঞ্চাশ বছর আগে সেই ১৯৭২ সালে চাঁদ থেকে আনা মাটিতে গাছ জন্মেছে। চাঁদের মাটিতে গাছপালা জন্মানো যে সম্ভব এবং প্রথমবারের মতো এই কাজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানিরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার গবেষকরা দেখেছেন, থ্যাল ক্রেস, অ্যারাবিডোপসিস থালিয়ানা, চাঁদ থেকে আনা মাটিতে সফলভাবে অঙ্কুরিত হতে এবং বৃদ্ধি পেতে পারে। এই গাছ ফুলকপি, সরষে এবং ব্রোকোলির মতো একই উদ্ভিদ পরিবারের অংশ। এই গবেষণার পরে মনে করা হচ্ছে যে এই গাছগুলি চাঁদে জন্মাতে পারে যার সাহায্যে চাঁদে খাদ্য এবং অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব।

শেষ বার চাঁদের মাটিতে মানুষ পা রেখেছিল সেই ১৯৭২ সালে। পঞ্চাশ বছর পরে ফের পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে মানুষ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। সেই মতো জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে।

অন্যদিকে, চিন ও রাশিয়া যৌথ উদ্যোগে লুনার স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু চাঁদে গিয়ে থাকতে হলে মানুষের বাঁচার জন্য চাই খাবার। জীবনধারণের সেই ন্যূনতম চাহিদা মেটানো সম্ভব কি না, তা জানতেই শুরু হয়েছিল গবেষণা। মিলল সাফল্য। চাঁদের মাটিতে জন্ম নিল এক টুকরো সবুজ!

অর্ধশত বছর আগে অ্যাপোলো অভিযানের সময়ে চাঁদ থেকে মাটি এনেছিলেন মহাকাশচারীরা। চাঁদের মাটিকে রিগোলিথ-ও বলা হয়। রিগোলিথের কিছু নমুনা সে সময়ে পরীক্ষাগারে ব্যবহার না করে ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, পরে যখন আরও উন্নত হবে বিজ্ঞান, সে সময়ে পরীক্ষা করে দেখা হবে। সামনে যদি ফের চন্দ্রাভিযান হয়, সে ক্ষেত্রে পুরনো নমুনা ব্যবহারের এটি আদর্শ সময়। তাই সম্প্রতি ‘তোরঙ্গ’ থেকে বার করা হয়েছিল অ্যাপোলো অভিযানের সময়ে আনা মাটির নমুনা।

নাসা জানায়, এই মাটিতে তেমন পুষ্টিগুণ নেই। তারই মধ্যে জন্মেছে অ্যারাবিডোপসিস থালিয়ানা। এদের জীবনীশক্তি খুব বেশি। অল্পেতে মরে না। গাছটিকে আফ্রিকা ও ইউরেশিয়ায় দেখতে পাওয়া যায়। সর্ষে গোত্রের গাছ এগুলো। ব্রকোলি, ফুলকপির মতো ক্রুসিফেরাস জাতের গাছ।

নাসার কর্মকর্তা বিল নেলসন বলেন, ‘চাঁদ কিংবা মঙ্গলে দীর্ঘ সময়কাল কী ভাবে থাকা যায়, তার ভাবনাচিন্তা চলছে বহুদিন। এজন্য খাবারের সন্ধান চাই। সেই ব্যবস্থা করা গেলে মহাকাশচারীরা চাঁদে থেকে গবেষণা করতে পারবেন। ল্যাবে চাঁদের মাটিতে গাছের জন্ম, সেই সম্ভাবনার দরজাই খুলে দিলো। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কী ভাবে গাছের ফলন সম্ভব, তা-ও বোঝা গেলো।’

উদ্যানবিদ্যার অধ্যাপক অ্যানা-লিসা পল বলেন, ‘ দু’দিন বাদেই বীজ থেকে কল বেরোতে শুরু করে। বলে বোঝাতে পারবো না, আমরা কী পরিমাণ অবাক হয়েছিলাম! দু’রকম ট্রে ছিল। এক ধরনের ট্রেতে চাঁদের মাটিতে বীজ ছড়ানো হয়েছিল। অন্য ট্রেতে পৃথিবীর মাটিতে বীজ দেওয়া হয়। দু’ক্ষেত্রেই একই রকম গাছ হয়েছে।’

২০ দিন বাদে ফুল আসার ঠিক আগে মাটি থেকে গাছগুলো কেটে নেয়া হয়েছিল। তার পর তা পাঠানো হয়েছিল আরএনএ সিকোয়েন্সিং-এ। জিন পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অ্যারাবিডোপসিসের প্রতিক্রিয়া যেমন হয়, এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সামান্য দুর্বল। তবে বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, ‘আসল কথা হলো, গাছ জন্মেছে।’

মে ১৪, ২০২২

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: