• ঢাকা

  •  শনিবার, মে ৪, ২০২৪

ফিচার

মুঘল সম্রাট বাবরের লালসার শিকার হতেন সুদর্শন তরুণরাও!

অনলাইন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: ১২:৪৯, ২২ জুন ২০২৩

মুঘল সম্রাট বাবরের লালসার শিকার হতেন সুদর্শন তরুণরাও!

ছবি: সংগৃহীত

মুঘল সম্রাট মির্জা জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ বাবরের না শোনা কাহিনি সামনে এসেছে। যিনি মুঘল হারেমে মহিলাদের ছাড়াও প্রায়শই সুন্দর ছেলেদেরকেও নিজের লালসার শিকার করেছেন। ইতিহাসের বইয়ে এই সম্রাট সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তিনি সমকামী সম্পর্ক রাখতে খুব পছন্দ করতেন।

মির্জা জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর পানিপথের ঐতিহাসিক যুদ্ধ জয়ের পর মুঘল রাজবংশের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, বাবর ছিলেন সমকামী।

বাবর পানিপথের প্রথম যুদ্ধে দিল্লীর লোদি রাজবংশের শেষ সুলতান ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করে দিল্লি দখল করে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। পানিপথের যুদ্ধে তিনিই প্রথম কামানের ব্যবহার করেন এবং তার প্রখর রণকৌশলের (রুমী কৌশল) কাছে হার মানেন ইব্রাহিম লোদি।

কিছু মিডিয়া রিপোর্টে, বাবরের জীবনী (বাবুরনামা) উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে যে মুঘল রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা নতুন যুবকদের সঙ্গে অর্থাৎ তরুণ সুদর্শন ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পছন্দ করতেন। তিনি যত বড় যোদ্ধা ছিলেন, ততই তিনি যৌনতার দ্বারাও প্রভাবিত ছিলেন।

ইতিহাসের পাতায় অনেক মুঘল সম্রাটের সমকামী সম্পর্কের কাহিনি আছে। অনেক জায়গায় খুব স্পষ্টভাবে লেখা আছে যে কোন কোন সম্রাটের হারেমে সুন্দরী, কোমল ও কামুক যুবকদেরও রাখা হতো।

বাবর ১৪৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান উজবেকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ৪৭ বছর বয়সে ১৫৩০ সালের ২৬ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তৈমুর লঙ্গের ষষ্ঠ বংশধর এবং মাতার দিক থেকে চেঙ্গিস খানের বংশধর ছিলেন।

শুধু সম্রাটই নয়, তার উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ ও বিশেষ মন্ত্রীরাও তাদের আলাদা হারেম রাখতেন। আকবর থেকে শাহজাহানের শাসনকাল পর্যন্ত এবং তার পরেও সমকামিতা প্রচলিত ছিল। যদি আকবরের আমলের কথা বলি, তার দরবারে খান জামান ওরফে আলী কুলি খান থাকতেন। তাকে পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধের নায়ক বলা হয়, কথিত আছে তার হৃদয় আকবরের সৈনিক শামীম বেগের উপর পড়েছিল। যখন তিনি আকবরের বিশেষ সৈনিক ছিলেন।

একইভাবে, ঐতিহাসিক ট্যাভার্নিয়ার লিখেছেন যে, শাহজাহানের শাসনামলে বুরহানপুরের গভর্নরকে হত্যা করা হয়েছিল। এই খুনের পেছনে ছিল সমকামিতা। কথিত আছে, গভর্নরের হৃদয় এক যুবকের প্রতি দুর্বল ছিল। তিনি তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। তিনি রাজি না হলে একদিন হিংসার বশে এবং গভর্নরের সঙ্গে যোগসাজশে জীবনের কাঁটা দূর করেন।

মধ্যযুগের কতিপয় কবির লেখা কবিতায় এমন অপ্রাকৃতিক প্রেমকাহিনির ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কবি সাইফির একটি ফার্সি কবিতায় লেখা আছে যে - 'একটি সুন্দর ছেলে এবং একটি ভাল কবিতার বই কাছাকাছি থাকলেই জীবন পূর্ণ হবে।' 

এখন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে মুঘলদের শাসনামলে শুধু নারীরা নয় ছেলেরাও শোষিত হতো। [জি২৪ঘণ্টা নিউজ]

বাবরের ছিল নয়জন স্ত্রী। তারা হলেন - আয়েশাহ সুলতান বেগম, বিবি মুবারিকা ইউসুফযায়, দিলদার বেগম, গুলনার আগাচেহ, গুলরুখ বেগম, মাহাম বেগম, মাসুমাহ বেগম, নারগুল আগাচেহ ও সাদিয়া আফাক।

বাবর ১৫৩০ সালের ২৬ ডিসেম্বর আগ্রায় মৃত্যুবরণ করেন। কথিত আছে যে, পুত্রের আরোগ্যের জন্য বাবর নিজেকে উৎসর্গ করেন। পুত্র হুমায়ুন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে পিতা বাবর তার নিজের জীবনের বিনিময়ে স্রষ্টার নিকট পুত্রের আরোগ্য কামনা করেন। ক্রমান্বয়ে হুমায়ুন আরোগ্য লাভ করতে থাকেন এবং বাবর পীড়িত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

ইতিহাসবিদদের মতে, ইব্রাহিম লোদীর মা বাবরকে হত্যার জন্য বিষ প্রয়োগ করেছিলেন। সেই বিষের ক্রিয়া তার শরীরকে ধীরে ধীরে অসুস্থ করে দেয়। এছাড়া শারীরিকভাবে প্রবল শক্তিশালী বাবর ভারতের আবহাওয়ার সাথেও মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। 

হুমায়ুননামায় তার কন্যা গুলবদন বেগম বলেছেন, বাবর অনেক আগে থেকেই পেটের পীড়ায় ভুগতেন। এছাড়া তাকে মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতায়ও অনেক যুদ্ধে লড়তে হয়েছে।

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: