লালমনিরহাটে আলুর দরপতনে কৃষক দিশেহারা
লালমনিরহাট: লাভের আশায় আগাম জাতের আলু চাষ করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে লালমনিরহাটের আলু চাষিদের। মৌসুমের শুরুতে কিছুটা দাম থাকলেও এখন প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৮-১০ টাকা কেজি দরে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন আলু চাষিরা।
কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি বছর লালমনিরহাট জেলায় ৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমি।
জেলার আদিতমারী ও হাতীবান্ধা উপজেলার ১০-১২টি গ্রামে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়। আলুর আবাদও হয়েছে ভাল। মৌসুমের শুরুতে বাজারে প্রতিকেজি আলু ৩০-৩২ টাকা দরে বিক্রি হয়। ক্রমান্বয়ে আলুর দাম কমতে কমতে ১৫-২০ টাকায় পৌঁছায়। কিন্তু গত এক সপ্তাহ থেকে সে দাম আরো কমে গিয়ে ৮-১০ টাকায় এসে পৌঁছেছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের কৃষক ইসলাম হোসেন জানান, তিনি এবার এনজিও থেকে বেশি সুদে ঋণ নিয়ে ২ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেন। উৎপাদনও হয়েছে বেশ ভাল। কিন্তু আলু হতে দেরী হওয়ায় তিনি এখন মহাবিপদে পড়েছেন। বাজারে আলুর দাম না থাকায় না পারছেন এনজিওর ঋণের কিস্তি দিতে, না পারছেন আলু মজুদ করতে।
ওই গ্রামের আলু চাষি সাদেকুল ইসলাম জানান, তার দুই বিঘা জমিতে আলুর ফলন হয়েছে বেশ ভাল। বস্তা করা পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজার মূল্য হিসেবে আলুর দাম ২৬ হাজার টাকা। এ অবস্থায় মোটা অংকের টাকা লোকসান দিচ্ছেন তিনি।
লালমনিরহাট কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিধু ভুষন রায় জানান, জেলার আদিতমারী ও হাতীবান্ধা উপজেলার কয়েকটি গ্রামে আগাম জাতের আলুর চাষ হয়েছে বেশ। কিন্তু বর্তমানে বাজারে দাম না থাকায় কৃষকরা তাদের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না। এ ভাবে চলতে থাকলে জেলায় কৃষকদের আলু চাষের উৎসাহ কমে যাবে।
জানুয়ারি ০৮, ২০১৭
মন্তব্য করুন: