• ঢাকা

  •  বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

ভিনদেশ

ভারতে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৩৩

অনলাইন ডেস্ক:

 আপডেট: ০৯:৪১, ৩ জুন ২০২৩

ভারতে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৩৩

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ওড়িশা প্রদেশের বালেশ্বরে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহত এবং আহতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে শনিবার (৩ জুন) ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩ ও আহত ৯০০ জনের বেশি।

তবে রেলসূত্রে মৃতের সংখ্যা ৮৮ বলে জানানো হয়েছে। আহত ৬০০ জনেরও বেশি।

অন্যদিকে, ওড়িশার দমকল বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল সুধাংশু ষড়ঙ্গী জানিয়েছেন, শনিবার ভোর পর্যন্ত অন্তত ১২০টিরও বেশি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। খবর - আনন্দবাজার

প্রত্যক্ষদর্শীদেরও আশঙ্কা, উদ্ধারকাজ যত এগোবে, নিহত এবং আহতের সংখ্যা আরো বাড়বে।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনে অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন। গভীর রাতে ট্রেনের দরজা ভেঙে ও গ্যাস কাটারের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। নামানো হয়েছে সেনাবাহিনীকেও।

দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারবর্গকে এককালীন ১০ লাখ টাকা, গুরুতর আহতদের ২ লাখ টাকা এবং অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ভারত সরকার।

এর আগে শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ হাওড়ার অদূরে শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় চার ঘণ্টা পরে ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার ট্রেনটি।

কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার একাধিক বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেসই তীব্র গতিতে গিয়ে ধাক্কা মারে একই লাইনে আগে আগে চলতে-থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে। এতে  করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। ২৩টি কামরার মধ্যে ১৫টি কামরা লাইন থেকে ছিটকে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে ও নয়ানজুলিতে। সেই লাইন দিয়ে তখন আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলি গিয়ে পড়ে ডাউন লাইনের উপর। বেঙ্গালুরু-হাওড়া ডাউন ট্রেনটি সেই বেলাইন কামরাগুলির উপর এসে পড়ে। হাওড়াগামী সেই ট্রেনটিরও দু’টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। 

> করমণ্ডল দুর্ঘটনা: বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের হটলাইন

তবে ভোর পর্যন্ত যে ৮৮ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে রেল, তাঁরা প্রত্যেকেই করমণ্ডলের যাত্রী বলে জানানো হয়েছে।

রেলের একটি সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, মালগাড়ির সঙ্গে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোনো সংঘর্ষ হয়নি। কোনো কারণে প্রথমে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। সেটি গিয়ে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে। সেই লাইন ধরে তখন আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেটি এসে ধাক্কা মারে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত কামরাগুলিকে। সেই ধাক্কায় করমণ্ডলের ইঞ্জিন তৃতীয় লাইনে দাঁড়িয়ে-থাকা মালগাড়ির উপরে উঠে যায়।

রেল সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় মালগাড়িটি খড়্গপুর থেকে ছাড়ে। তার ১৩ মিনিট পরে খড়্গপুর স্টেশন ছাড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। মালগাড়ি এবং করমণ্ডল এক্সপ্রেস একই লাইনে চলছিল ১৩ মিনিটের ব্যবধানে। বালেশ্বর স্টেশন ছাড়িয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার যাওয়ার পরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রাথমিক অনুমান, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের চালক যে ওই ১৩ মিনিটের গতির ব্যবধান কমিয়ে ফেলেছেন, তা তিনি বুঝতে পারেননি। তার কারণ সিগন্যালের ত্রুটি হতে পারে। হতে পারে সিগন্যাল দেওয়া হলেও চালক তা খেয়াল করেননি। অথবা একই লাইনে যে মালগাড়িটি রয়েছে, তা তিনি খেয়াল করেননি।

করমণ্ডল এক্সপ্রেস মূলত বাংলা থেকে দক্ষিণ ভারতের হাসপাতালগুলিতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান মাধ্যম। প্রতিদিন বহু মানুষ করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু এবং কর্নাটকে যান। 

করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটে শোকপ্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, ‘‘ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই দুঃসময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইলো। আহতেরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।’’ 

জুন ৩, ২০২৩

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: