• ঢাকা

  •  বুধবার, মে ২৮, ২০২৫

জেলার খবর

হাট মাতাবে ১ টনের ‘লালবাবু’ দাম ১২ লাখ

মোঃ আরিফুল হক

 প্রকাশিত: ১৭:৩৩, ২৭ মে ২০২৫

হাট মাতাবে ১ টনের ‘লালবাবু’ দাম ১২ লাখ

ছবি- সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় গত বছরের অ-বিক্রিত প্রায় এক টন ওজনের 'লালবাবু' এবারও কুরবানির হাট মাতাবে।  ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার শিমরাইল গ্রামে সাড়ে চার বছর ধরে পাকিস্তানি শাহিওয়াল জাতের গরুটিকে লালন-পালন করে আসছেন আব্দুল হান্নান। নিজের পালিত একটি গাভী থেকে জন্ম নেয় লালবাবু। গত বছর পবিত্র ঈদুল আযহায় লালবাবুকে বাজারে উঠালে সন্তোষজনক দাম না পাওয়ায় বিক্রি করেনি আব্দুল হান্নান।

এবারও বিশাল আকৃতির এই গরু ইতোমধ্যেই সবার নজর কেড়েছে। ১০০০ কেজির লালবাবুর খবর পেয়ে অনেকেই দেখতে আসছেন, দামও বলছেন। তবে দাম সন্তোষজনক হলেই বিক্রি করবেন হান্নান।

পরম যত্ন আর পরিচর্যায় লালন করা গরুটি লাল রঙের হওয়ায় মালিক আব্দুল হান্নান আদর করে তার নাম রেখেছেন ‘লালবাবু’। বিক্রির কথা শুনলেই অঝোরে কাঁদে লালবাবু।

গরুর মালিক আব্দুল হান্নান বলেন, নিজের সন্তানের মতোই লালবাবুকে লালন-পালন করেছি। এই গরমে বিদ্যুৎ না থাকলে গভীর রাত পর্যন্ত হাতপাখা দিয়ে লাল বাবুকে বাতাস করি। তাই বিক্রি করে দেওয়ার কথা শুনলেই লালবাবু কাঁদে। তার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ে। এসময় আমারও কষ্ট হয়। 

মঙ্গলবার সকালে হান্নানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, লালবাবুর পরিচর্যা করছেন তিনি। হান্নানের  ছেলে লুৎফর রহমান সোহেল বলেন, লালবাবুর দৈর্ঘ্য প্রায়  ১০ ফুট ও উচ্চতা প্রায় ৬ ফুট।

খামারি আব্দুল হান্নান বলেন, শখের কারণে বড় করেছি গরুটি। আগে থেকেই আমার গরু পালার শখ। কিন্তু এখন আমার অনেক বয়স হয়েছে। শরীরটা আর সায় দেয় না।  তাই বিক্রি করে দেওয়ার নিয়ত করেছি। গরুটি বিক্রির জন্য দাম চাচ্ছি ১২ লাখ টাকা। তিনি আরও বলেন, আমি প্রাকৃতিক খাদ্য খাওয়ানোর মাধ্যমে লালবাবুকে বড় করেছি। দৈনিক দেড় হাজার টাকার খাবার খায় লালবাবু।

প্রচণ্ড গরমের কারণে গরুটিকে প্রতিদিন ২-৩ বার গোসল করাতে হয়। গরুটিকে বাতাস করার জন্য ফ্যান লাগানো হয়েছে। এই গরুটিসহ খামারের বাকি গরুগুলোকে ভুষি, ভুট্টা, ঘাস,খড় ও পাকা কলা খাওয়ানো হয়।

হান্নানের প্রতিবেশী সিরাজ মিয়া ও সবুজ বলেন, হান্নান সাহেব লালবাবুকে  অনেক কষ্ট করে লালন-পালন করেছেন। এমন বড় গরু আমি জীবনেও দেখিনি। এটা ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু হবে।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম বলেন, শাহিওয়াল জাতের গরু আকারে অনেক বড় হয়। সাধারণত খরচের কথা বিবেচনা করে খামারিরা সচরাচর গরু এত বড় করে না। এক্ষেত্রে আব্দুল হান্নান গরুটিকে বড় করে সফল হয়েছেন। গরুটিকে যেনো কোন প্রকার ক্ষতিকারক খাবার এবং স্টেরয়েড প্রয়োগ করা না হয় এ বিষয়ে গরুর মালিককে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। লালবাবু এবার কুরবানির হাটে সাড়া ফেলবে বলে আশা করি।

 

এসবিডি/ওবায়দুর রহমান

মন্তব্য করুন: