• ঢাকা

  •  মঙ্গলবার, মে ১৩, ২০২৫

বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল ইসি

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: ০৯:০২, ১৩ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল ইসি

অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় দলটির নিবন্ধন স্থগিত করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। 

সোমবার (১২ মে) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর রাতে কমিশন বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। 

এর আগে বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকারি প্রজ্ঞাপন বিশ্লেষণে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। 

বৈঠক শেষে ইসির সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম ও অঙ্গসংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সেই প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ পর্যায়ে দলটির নিবন্ধন স্থগিত করা হলো। সেই অনুযায়ী ইসির পক্ষ থেকেও গেজেট তৈরি করা হয়েছে। পরে গেজেটটি বিজি প্রেস থেকে আপনারা পেয়ে যাবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনের ধারাবাহিকতায় আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এর আগে সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের কক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সিইসির নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আব্দুর রহমানেল মাছউদ ও সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে এদিন বিকেলে অভ্যুত্থান দমাতে ‘গুম, খুন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গণহত্যা, বেআইনি আটক, অমানবিক নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কার্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সব কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।

সদ্য সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারার আওতায় এই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। এর অর্থ হলো, আওয়ামী লীগ আপাতত কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি বা প্রচার চালাতে পারবে না।

জুলাই আন্দোলন দমনে ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করতেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সে জন্য ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনও সংশোধন করা হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে যে কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য ইসির নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন প্রথা চালু করে নির্বাচন কমিশন। গত চারটি নির্বাচনে পঞ্চান্নটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেয়েছিল।

দেশের প্রাচীনতম দলটির নিবন্ধন নাম্বার ৬, প্রতীক নৌকা। নিবন্ধন স্থগিতের মাধ্যমে দলটির ভোটে অংশগ্রহণ বন্ধ হয়ে গেল। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে ৪৯টি দল নিবন্ধিত রয়েছে। এবার আওয়ামী লীগ এর নিবন্ধন স্থগিত হলো। এর আগে নিবন্ধন  শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে জামায়াতসহ ৫টি (জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা) দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। 

জুলাই আন্দোলন দমনে ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সরকার নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি দলটিকে বিচারের মুখোমুখি করতেও পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। সেজন্য ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনও সংশোধন করা হয়েছে।

এসবিডি/এবি

মন্তব্য করুন: