• ঢাকা

  •  রোববার, মে ১৯, ২০২৪

জেলার খবর

আটোয়ারীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের গাছ বিক্রির অভিযোগ

আটোয়ারী প্রতিনিধি:

 প্রকাশিত: ২০:২২, ৭ জুলাই ২০২৩

আটোয়ারীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের গাছ বিক্রির অভিযোগ

ছবি: সময়বিডি.কম

আটোয়ারী (পঞ্চগড়): পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ‘পশ্চিম নিতুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ চত্বরের ছয়টি পরিপক্ক ইউক্যালিপ্টাস গাছ সুকৌশলে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাফিজ উদ্দীনের বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঈদুল আজাহার আগের দিন বুধবার (২৮ জুন) সুকৌশলে বিদ্যালয় চত্বর হতে গাছগুলো কেটে সাথে সাথে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক নিজেকে রক্ষা করার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন চলছে।

বিদ্যালয়ের সরকারি গাছ কর্তন বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ হাফিজ উদ্দীন বলেছেন, গাছগুলো গত ২৭ মে, ২০২৩ তারিখে সরকারিভাবে নিলাম ডাকে বিক্রি হয়েছে। নিলাম ডাকের কাগজ আমার হাতে আছে। তালিকার ৫ নম্বরে আমাদের বিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ আছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'সরকারদলীয় ‘খালেক’ নামের এক নেতা নিলাম ডাকের কাগজটি আমার হাতে দিয়েছেন। যদিও নিলাম ডাকের কাগজ আমি হাতে পেয়েছি তবে নিলাম ডাক সম্পর্কে আমি অবগত নই।'

প্রধান শিক্ষকের কথা শুনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় হতে নিলাম ডাকের কাগজ সংগ্রহ করে দেখা যায়, ২৭ মে, ২০২৩ তারিখে কোনো নিলাম ডাক হয়নি। তবে ২৮ মে, ২০২৩ তারিখে ডাকা নিলামের তালিকায় ওই বিদ্যালয়ের নাম নেই।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, শুনেছি, পশ্চিম নিতুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ কেটেছে। গাছ কাটা বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আমাকে অবগত করেননি। বিদ্যালয়ের গাছ অবৈধভাবে কর্তনের কথা শুনে প্রধান শিক্ষককে অফিসে তলব করা হয়েছিল। অফিসে এসে তিনি বলেছেন, 'গাছগুলি বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির বাহিরে অন্য লোকের। জমির মালিক গাছ বিক্রি করেছে, আমি বিক্রি করিনি।'

তবে শিক্ষা কর্মকর্তাকেও আগে মোবাইল ফোনে নিলাম ডাকের কাগজের কথা জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। 

ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি ও তোড়িয়া ইউপি সদস্য নির্মল বলেন, প্রধান শিক্ষক ভূল বলেছেন। আসলে নিলাম ডাকের কোনো কাগজ তার কাছে নেই। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক আরো বলেছেন, গাছগুলো সাবেক মেম্বার জাহাঙ্গীর আলমের জমিতে ছিল, তিনিই বিক্রি করেছেন। 

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর মেম্বার বলেন, ওই বিদ্যালয়ের পাশে আমার জমি আছে, কিন্তু গাছ বিদ্যালয়ের জায়গায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রোপন করেছেন, আমার জানামতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গাছগুলো বিক্রি করেছেন। 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মুসফিকুল আলম হালিম বলেন, পশ্চিম নিতুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ কর্তনের বিষয়টি আমি অবগত আছি। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ তদন্ত করেছেন। রিপোর্ট হাতে পেলে তদন্ত রিপোর্ট মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এলাকার সচেতন মহলের মতে, কুটকৌশলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সরকারি গাছ কর্তনে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যতে সরকারি গাছ অবৈধভাবে কর্তনে মানুষ বেপরোয়া হতে পারে।

জুলাই ৭, ২০২৩

মোঃ রবিউল হক/এবি/

মন্তব্য করুন: