ঈশ্বরগঞ্জে জাল দলিলে মাদ্রাসার জমি দখলের অভিযোগ
ছবি- সংগৃহীত
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ইউনুছ খাদিজিয়া দাখিল বালিকা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। কাগজে-কলমে ১ একর ৪ শতাংশ জায়গা নিয়ে উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের গোল্লাজয়পুর গ্রামে মাদ্রাসাটি অবস্থিত। যার প্রতিষ্ঠাতা একই গ্রামের প্রয়াত ইউনুছ আলীর ছেলে এ,কে,এম আবুল হোসাইন(৭৫)।
প্রতিষ্ঠানের জমি দিয়েছিলেন আবুল হোসাইনের মা প্রয়াত খাদিজা খাতুন ও বাবা ইউনুছ আলী। যেকারণে স্বামী-স্ত্রীর নামের সাথে মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয়েছিল ইউনুছ খাদিজিয়া দাখিল বালিকা মাদ্রাসা। কিন্তু প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে মাদ্রাসার নামে থাকা ৩০ শতাংশ জমি দখল করে আছেন পার্শ্ববর্তী হরিয়াখালী গ্রামের প্রয়াত ছাবেদ আলীর দুই ছেলে আব্দুল মতিন(৫০) ও আব্দুল মজিদ(৪৫)।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে,ইবতেদায়ী প্রথম শ্রেণি থেকে দাখিল দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী বর্তমানে মাদ্রাসায় পড়ালেখা করছে। ১১ জন শিক্ষকসহ ১৬ জন স্টাফ আছে মাদ্রাসায়। প্রতি বছরই মাদ্রাসা থেকে অনেক শিক্ষার্থী দাখিল পাস করে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে সুনাম অর্জন করছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাদ্রাসায় যাতায়াতের রাস্তা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। পূর্বে নানা অনিয়মের কারণে মাদ্রাসার উন্নয়ন অনেকটা পিছিয়ে গেছে। মাদ্রাসার সার্বিক উন্নয়নে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় বেদখলে থাকা ৩০ শতাংশ জমিও মাদ্রাসার উন্নয়নে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। মাদ্রাসার উন্নয়নকল্পে জায়গাটি উদ্ধার জরুরি বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন,'আমাদের ইউনুছ খাদিজিয়া দাখিল বালিকা মাদ্রাসার অর্থাৎ সরকারি ৩০ শতাংশ জমি হরিয়াখালীর গ্রামের মতিন ও মজিদ গংরা বহু বছর ধরে দখল করে আছেন। অথচ মাদ্রাসার নামে ওয়াকফ করা জমির বৈধ দলিলসহ সকল কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু মাদ্রাসার উন্নয়নে উক্ত জমি বা জমির উৎপাদিত ফসল কোনটাই কাজে আসছে না। আমরা চাই প্রতিষ্ঠানের জমি প্রতিষ্ঠান ফেরত পাক। যদি তারা স্বেচ্ছায় মাদ্রাসার জমি বুঝিয়ে না দেয় তাহলে আমরা আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদ্রাসার জমি ভোগদখলকারী আব্দুল মতিন বলেন,'৩০ শতাংশ জায়গা আমাদের পৈত্রিক সূত্রে কেনা। এই জায়গার দলিলসহ যাবতীয় কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে। মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এ.কে.এম আবুল হোসাইন বলেন,'প্রতারণা করে জাল দলিল বানিয়ে তারা মাদ্রাসার জমি দখল করে আছেন। মাঠ পর্চা ও দলিলসহ সমস্ত অরিজিনাল ডকুমেন্ট আমাদের কাছে আছে। কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়া আমরা মাদ্রাসার জমি ফেরত চাই।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন,' প্রতিষ্ঠানের জমি জোরপূর্বক দখল করে রাখার অধিকার কারও নেই। মাদ্রাসার জমি মাদ্রাসার আওতাধীন থাকবে এটাইতো নিয়ম। কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা অথবা প্রশাসনিকভাবেও জমি উদ্ধারের চেষ্টা করতে পারে।
এসবিডি/ওবায়দুর রহমান
মন্তব্য করুন: