• ঢাকা

  •  রোববার, মে ১৯, ২০২৪

অপরাধ

দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণ, ‘নখের আঁচড়ে’ ধরা পড়লো দুই হত্যাকারী

নিজস্ব প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ১৪ এপ্রিল ২০২০

দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণ, ‘নখের আঁচড়ে’ ধরা পড়লো দুই হত্যাকারী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মধ্যপাড়ার এক বাসার নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লুবনা আক্তার (১৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন  হয়েছে বলে দাবি করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানা পুলিশ।

পুলিশ জানায়, শহরের কাজীপাড়া এলাকার মুসলিম মিয়ার মেয়ে লুবনা আক্তারকে দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণের পর গলায় দড়ি পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। মূলত 'নখের আঁচড়ের' সূত্র ধরে লুবনার দুই হত্যাকারীকে সনাক্ত করেছে তারা। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত রানা কর (৩০) ও নুপুর বসাক (৩২) নামে দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তাদের দুইজনের বাড়ি মধ্যপাড়া এলাকার বসাকপাড়া মহল্লায়। নিহত লুবনার সঙ্গে নুপুরের পূর্বপরিচয় ছিল বলে পুলিশের দাবি।

সোমবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পুলিশ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, ভোররাতে একটি নম্বর থেকে আমাদের কাছে ফোন দিয়ে বলা হয় কাজের মেয়েকে মারধর করা হচ্ছে। এরপর থেকেই ফোন নম্বরটি বন্ধ রয়েছে। ঘটনাটি জানার পর সকালে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করি। প্রথমে আমারা ওই তরুণীর পরিচয় পাইনি। সে কাজের মেয়ে কিনা সেটিও আমরা বুঝতে পারছিলাম না।

তিনি বলেন, 'পরবর্তীতে ওই তরুণীর পরিবারে এসে লাশ সনাক্ত করে। লাশের পাশে একটি ভাঙা টব ছিল। গলায় রশি পেচানো থাকলেও আমরা নিশ্চিত ছিলাম এটি হত্যাকাণ্ড। আর লাশ দেখে মনে হচ্ছিল দূরে থেকে এনে এখানে ফেলে যাওয়া হয়নি। যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা আশপাশেরই হবে। সেজন্য প্রথমেই আমরা আশপাশের ঘরগুলোকে আমরা নজরদারিতে রাখি।'

তিনি আরও বলেন, প্রথমে আমরা সন্দেহভাজন হিসেবে রানাকে আটক করি। তার শরীরে 'নখের আঁচড়' দেখেই আমাদের সন্দেহ হয়। লুবনাকে ধর্ষণ অথবা হত্যার সময় হয়তো সে বাঁচার জন্য নখ দিয়ে আঁচড় দিয়েছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রানা হত্যার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, সে ও তার বন্ধু নুপুর মিলে ধর্ষণের পর লুবনাকে হত্যা করে ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে। 

;রবিবার রাতে নুপুর ফোন করে লুবনাকে রানার বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর রাত দেড়টার দিকে প্রথমে নুপুর এবং পরবর্তীতে রানা ধর্ষণ করে লুবনাকে। ধর্ষণের পর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ছাদ থেকে লুবনাকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। কোনো প্রমাণ না রাখার জন্য লুবনার মোবাইল ফোনটি ভেঙে বাড়ির পাশে ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয়।'

মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, রানার গায়ে নখের আঁচড় বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে বলতে পারবেন লুবনার নখের আঁচড় কিনা। আমাদের তদন্ত এখনও চলেছে। তবে ধর্ষণের পর লুবনাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে রানা এবং নুপুর।

এর আগে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মধ্যপাড়া এলাকার বসাকপাড়া মহল্লার রানার বাড়ির পাশে একটি বাড়ির ওঠান থেকে লুবনার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের পরপরই নিহতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রানাকে আটক করে পুলিশ। এরপর দুপুরে নুপুরকেও আটক করা হয়। 

এপ্রিল ১৪, ২০২০

মন্তব্য করুন: