• ঢাকা

  •  রোববার, মে ১৯, ২০২৪

অপরাধ

চুয়াডাঙ্গায় তিন শতাধিক মানুষের ৮ কোটি টাকা নিয়ে উধাও সততা ব্রিকসের তিন মালিক

নিজস্ব প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: ১২:৩১, ২ মার্চ ২০২২

চুয়াডাঙ্গায় তিন শতাধিক মানুষের ৮ কোটি টাকা নিয়ে উধাও সততা ব্রিকসের তিন মালিক

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় ৮ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে সততা ব্রিকস অ্যান্ড কনস্ট্রাকশনের মালিক খোদেজা বেগম। গত দুই বছরে ইট দেওয়ার নামে প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষের কাছ থেকে এসব অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। টাকা ফেরত না পেয়ে অবশেষে কয়েকশ ভুক্তভোগী বিক্ষোভ সমাবেশ এবং মানববন্ধন করেছে।

মঙ্গলবার (১ মার্চ) বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বদরগঞ্জ গ্রামে অবস্থিত সততা ব্রিকস নামে এই ইটভাটার সামনে টাকা ফেরতের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয় ভুক্তভোগীরা। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

জানা যায়, ১৫ বছর আগে জেলা সদরের বদরগঞ্জ দশমীপাড়ার সুবেদার নামে একজন সততা ব্রিকস অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন নামে একটি ইটভাটা প্রতিষ্ঠা করেন। সুনামের সহিত সে ব্যবসা করে আসছিল। গত তিন বছর আগে সততা ইট ভাটার মালিক সুবেদার মারা যান। এরপর ব্যবসার হাল ধরেন তার স্ত্রী খোদেজা বেগম, ভাই শরিয়ত উল্লাহ ওরফে মেজর ও আব্দুল বারী।

খোদেজা বেগম ব্যবসার পাশাপাশি আলিয়ারপুর আজিজ মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। সুচতুর ওই তিন ব্যবসায়ী গত দুই বছর ধরে বদরগঞ্জ ও সরোজগঞ্জ এলাকার আশেপাশের ২০ গ্রামের সাড়ে তিনশ' মানুষের কাছে কম দামে ইট দেয়ার নামে ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। গতবছর কিছু মানুষের ইট দিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামলে নিয়ে আরও অনেকের কাছ থেকে টাকা নেয়। চলতি মৌসুমে তারা ইটভাটা চালুই করেনি। এতে টাকা লগ্নিকারীদের মনে আরো সন্দেহ বাড়ে। এক পর্যায়ে টাকার দাবিতে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এর মধ্যে অনেকেই লোক লজ্জার ভয়ে টাকা বিনিয়োগের কথা স্বীকার করছেন না।

টাকা লগ্নিকারী এনজিওকর্মী কামরুজ্জামান বলেন, ইট নেওয়ার জন্য আমি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। প্রতি ট্রাক অর্থাৎ দুই হাজার ইটের মূল্য ধরেছে ১৪ হাজার টাকা। নতুন ইট উঠলে আমার ইট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই তারা গা ঢাকা দিয়েছে। আমার মতো অনেক মানুষ গরু-ছাগল বিক্রি করে ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সস্তায় ইট কেনার জন্য টাকা জমা করেছেন।
  
এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে ইটভাটা এলাকায় টাকা লগ্নিকারীরা জড়ো হয়। তারা টাকা জমা দেওয়ার রশিদ হাতে নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ছুটে আসেন। 

এর আগে যারা সততা ব্রিকস অ্যান্ড কনস্ট্রাকশনে টাকা জমা দিয়েছে তাদের নাম ও টাকার পরিমান একটি রেজিস্ট্রার খাতায় অন্তর্ভুক্ত করে নেয় ভুক্তভোগী কয়েকজন সদস্য৷ সন্ধ্যা পর্যন্ত যারা রেজিস্ট্রার খাতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে তাদের সংখ্যা ৩১৮ জন। টাকার পরিমান ৭ কোটি ৯৫ লাখ ৩১ হাজার।

এদিকে জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মোতালেব হোসেন বলেন, সততা ব্রিকস আমাদের সমিতির অন্তর্ভুক্ত নয়। সেইজন্য সমিতির পক্ষ থেকে আমাদের কিছুই করার নেই। 

তিনি আরো বলেন, কোনো ইটভাটা থেকে ইট কেনার জন্য আগে থেকে টাকা দিবেন না।  

মার্চ ২, ২০২২
সালাউদ্দীন কাজল/এবি

মন্তব্য করুন: