• ঢাকা

  •  রোববার, মে ১৯, ২০২৪

অর্থ ও কৃষি

গাছে গাছে আমের মুকুল, বাতাসে পাগল করা ঘ্রাণ

নিজস্ব প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ৬ মার্চ ২০২২

গাছে গাছে আমের মুকুল, বাতাসে পাগল করা ঘ্রাণ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলার আম গাছগুলোতে এরইমধ্যে মুকুল আসতে শুরু করেছে। নানা ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে আমের মুকুল। আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি।

বছর ঘুরে আবারো তাই ব্যাকুল হয়ে উঠেছে আমপ্রেমীদের মন। এবার সময়ের আগেই সোনালি মুকুলে ভরে গেছে চুয়াডাঙ্গা জেলার আম বাগানগুলো। 

বিভিন্ন এলাকার বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে নানা ফুলের সঙ্গে আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ বাতাসে মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা করে তুলছে। থোকায় থোকায় হলুদাভ রঙের মুকুল আসতে শুরু করেছে। গাছে মুকুল ও গুটি আম দেখে ইতোমধ্যে বেপারিরা বাগানের দরদাম হাঁকছেন। আর বাগানের মালিকরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গতবছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট এক হাজার ৮৯২ হেক্টর জমিতে ৩২ হাজার ৯৫৫ মেট্রিকটন আম উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৮২৬ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ২৮০ হেক্টর, জীবননগরে ৪১০ হেক্টর ও দামুড়হুদায় ৩২৫ হেক্টরসহ মোট এক হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারে ৯৩ হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে। এবারের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৩ হাজার মেট্রিকটন।

চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া আম চাষের অনুকূলে থাকা ও আম লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই আমের আবাদ বাড়ছে। এ জেলাতে প্রধান প্রধান আমের আবাদ হচ্ছে- আম্রপালি, লেংড়া, ফজলি, হাড়িভাঙা, মল্লিকা, থাই, গোপালভোগ, বারি ১০, দেশি, বেনারসি সিতাভোগ। এরমধ্যে সিংহভাগই আম্রপালি।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জাফরপুর গ্রামের আম চাষি বকুল হোসেন জানান, এ বছর আমার আম গাছে প্রচুর পরিমাণে মুকুল আসতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত আমের মুকুলে কোনো রোগ-বালাই আক্রমণ করেনি। আবহাওয়াও ভালো। যদি কোনো প্রাকৃৃতিক দুর্যোগ না আসে আশা করছি প্রতিটি আম গাছেই পর্যাপ্ত পরিমাণে আম ধরবে।

জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আম বাগানের মালিক মাজেদুর রহমান জানান, বাগানের অধিকাংশ গাছেই এরইমধ্যে মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। গতবছর সাড়ে ছয় বিঘা জমিতে আমের বাগান ছিল। যা বিক্রি করেছিলাম চার লাখ টাকায়। এবছর ১১ বিঘা আমের বাগান আছে। এলাকাতে ফসলি চাষের জমি রেখে অনেকেই আম বাগান করেছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, চুয়াডাঙ্গাতে আমের উৎপাদন ভালো হয়। এ বছর একটু আগে ভাগেই আম গাছে মুকুল আসছে। তাছাড়া এখন পর্যন্ত প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ দেখা দেয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমগাছে খুবএকটা কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হবে না। তবে ছত্রাকজনিত রোগে আমের মুকুল ও গুটি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বাগানে দুই দফা ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, আম চাষে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। যার কারণে অনেকই এ পেশায় এগিয়ে আসছেন। বর্তমানে জেলাতে আবাদি জমিতে আমের চাষ করা হচ্ছে। আমের ভালো ফলন পেতে আমরা কৃষকদের বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দিচ্ছি।

মার্চ ৬, ২০২২
সালাউদ্দীন কাজল/এবি

মন্তব্য করুন: