পতনের দ্বারপ্রান্তে বাখমুত শহর, রাশিয়ার জন্য বড় অর্জন

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বাখমুত (bakhmut) শহর দখল নিয়ে তীব্র লড়াই চলছে। দু’পক্ষের প্রচণ্ড লড়াইয়ের মধ্যে রুশ বাহিনীর নিয়মিত সৈন্যরা শহরের উত্তরাঞ্চলে অগ্রসর হচ্ছে। তাদের সাথে রয়েছে ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটে সৈন্যরা।

ইউক্রেনীয় বাহিনী সেখান থেকে সরে আসার আগে শেষবারের মতো প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বিবিসি জানায়, পশ্চিমা দেশের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাখমুত থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রত্যাহারের মঞ্চ তৈরি হয়েছে।

ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ওই শহরের পশ্চিমে নতুন পরিখা খনন করেছে এবং তাদের অভিজাত ইউনিটগুলোকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।

কিন্তু বাখমুতের ডেপুটি মেয়র অলেক্সান্ডার মার্চেনকো জোর দিয়ে বলছেন, রুশ সৈন্যরা এখনও শহরটি দখল করতে পারেনি। তিনি জানিয়েছেন, শহরের শেষ ৪ হাজার বেসামরিক নাগরিক গ্যাস, বিদ্যুৎ বা পানিবিহীন অবস্থায় আশ্রয়কেন্দ্রে লুকিয়ে রয়েছে। শহরটির একটি বিল্ডিংও অক্ষত নেই, এবং প্রচণ্ড গোলাবর্ষণে পুরো শহরটি ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। গত ক’মাস ধরেই রাশিয়া চেষ্টা করছে বাখমুত শহরটিকে দখল করতে। লড়াই শহরের কাছাকাছি চলে এসেছে এবং রাস্তায় রাস্তায় লড়াই চলছে।

ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন বলেছেন, এখন এই শহর থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য একটাই পথ খোলা আছে। বাখমুট থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য তিনি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, একটি বাড়ির ছাদের ওপর ধারণ করা ভিডিওতে ওয়াগনার প্রধান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উদ্দেশ্যে বলেন, ইউক্রেনীয় সৈন্যদের জীবন বাঁচাতে হলে তাদেরকে সরিয়ে নিন।

বাখমুট কেন গুরুত্বপূর্ণ:
পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রসদ সরবরাহের জন্য একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পথের ওপর এই বাখমুট শহরের অবস্থান। এই শহরের নিয়ন্ত্রণ দখল করতে পারলে রাশিয়া এই এলাকাটিকে ক্রামাটরস্ক ও স্লোভিয়ানস্কের মতো দুটি বড় শহরের দিকে এগিয়ে যাবার জন্য ভিত্তি তৈরি করতে পারবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাখমুট শহরে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে রাশিয়ার পক্ষে পুরো ডনবাস অঞ্চল দখল করে নেওয়া আরো সহজ হয়ে উঠবে।

বাখমুট দখল করার জন্য লড়ছে রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ। এই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন। বহু রুশ কারাবন্দীকে এই বাহিনীতে সৈনিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং তারা সহিংস যুদ্ধের জন্য সুপরিচিত। ইউক্রেনের যুদ্ধ ছাড়াও আফ্রিকার কিছু সংঘাতে তারা জড়িত।

এই শহরটিকে নিজের দখলে আনা রাশিয়ার জন্য সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এক বিরাট সাফল্য বলে বিবেচিত হবে।

মার্চ ৫, ২০২৩