• ঢাকা

  •  মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪

অর্থ ও কৃষি

চাটমোহরে বোরো আবাদ নিয়ে কৃষক বিক্ষোভ, ইউএরওর সঙ্গে বৈঠক

পাবনা প্রতিনিধি:

 আপডেট: ০৮:১৩, ১০ জানুয়ারি ২০২৩

চাটমোহরে বোরো আবাদ নিয়ে কৃষক বিক্ষোভ, ইউএরওর সঙ্গে বৈঠক

ধানের বদলে টাকা দিয়ে বোরো ধান চাষের দাবিতে চাটমোহরে কৃষকদের বিক্ষোভ। ছবি: সময়বিডি.কম

পাবনা: পাবনার চাটমোহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শতাধিক কৃষক। চলতি বোরো চাষ মৌসুমে সেচযন্ত্রের মালিক কর্তৃক সেচ চার্জ বাবদ সিকি ভাগ ধান আদায়ের চেষ্টার প্রতিবাদে এবং টাকা দিয়ে জমিতে সেচ নেওয়ার দাবিতে এই বিক্ষোভ হয়।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) চাটমোহরের বোয়াইলমারী ও এর আশেপাশের এলাকার কৃষকরা এ বিক্ষোভ মিছিল করেন। 

এ নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত কৃষক ও সেচযন্ত্রের মালিকের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।

কৃষকদের অভিযোগ., এ এলাকার প্রথা অনুযায়ী সেচযন্ত্রের মালিকরা চারভাগের এক ভাগ ধান নিয়ে আসছিলেন কৃষকদের থেকে। কৃষককে সেচযন্ত্রের মালিকের অংশের ধানও কেটে দিতে হতো। এতে বছরের পর বছর কৃষকের লোকসান হচ্ছিল। কৃষকের লোকসান এড়াতে সর্বশেষ বিঘাপ্রতি ২ হাজার ২০০ টাকা হারে সেচ চার্জ নির্ধারণ করা হয়।

বোয়াইলমারী এলাকার কৃষকেরা জানান, বোয়াইলমারী এলাকায় তিনটি গভীর নলকূপ ও একটি অগভীর নলকূপের মাধ্যমে প্রায় ৬০০ বিঘা জমিতে সেচ দেন সাবেক এমপি শামসুদ্দিন খবির। চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই তিনি কৃষককে চারভাগের এক ভাগ ধানের বিনিময়ে আবাদ করার কথা বলে আসছিলেন। এতে কৃষক সম্মত না হওয়ায় তিনি তার অধীনস্ত গভীর ও অগভীর নলকূপ এলাকায় কৃষকের জমিতে পানি দিচ্ছেন না। ফলে কৃষক বোরো চাষ করতে পারছেন না। এ নিয়ে কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিএডিসি কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তা বরাবর বরাবর লিখিত অভিযোগও করেন। দফায় দফায় চেষ্টার পরও কোনো সমাধান না আসায় সোমবার বিক্ষোভ শেষে কৃষকেরা ফের দেখা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহলের সাথে।

কৃষকদের একটি প্রতিনিধি দল তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বৈঠক করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুঠোফোনে চারটি সেচযন্ত্রের মালিক সাবেক এমপি শামসুদ্দিন খবিরের সাথে কথা বলেন। তার সাথে কথা বলার পর সিদ্ধান্ত হয় চলতি মৌসুমে কৃষক কমিটি করে সাবেক এমপি শামসুদ্দিন খবিরের সেচযন্ত্রগুলো পরিচালনা করবেন। সকল যন্ত্রপাতি যেভাবে গ্রহণ করবে আবাদ শেষে কৃষক সেভাবে নলকূপের মালিককে বুঝিয়ে দিবে। প্রতিমাসের বিদ্যুৎ বিল নলকূপ মালিকের নামেই পরিশোধ করবে কৃষক। চারজন ড্রাইভার ও একজন ম্যানেজারের একমাসের বেতন, বিদ্যুৎ সংযোগ, স্কিম সংস্কার খরচ বাবদ কৃষক এক লাখ ৩৮ হাজার টাকা নলকূপ মালিককে অগ্রিম পরিশোধ করবে। কৃষক কমিটি জমির মালিকদের নিকট থেকে সরকার নির্ধারিত সেচ চার্জের অতিরিক্ত চার্জ গ্রহণ করতে পারবে না।

কৃষকনেতা ও নলকূপ মালিকের সাথে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অপেক্ষমান সকল কৃষককে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন। ১১ জানুয়ারি এটি চূড়ান্ত করা হবে এবং নলকূপগুলো চালু করা হবে বলে কৃষককে আশ্বস্ত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহল। ফলে আপাতত এ দ্বন্দ্বের অবসান হলো।

এ সময় চাটমোহর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইছাহক আলী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা পারভীন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ, ছাইকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান নূরু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, উপজেলার অন্যান্য এলাকার গভীর ও অগভীর নলকূপ মালিকদের কেউ কেউ ইতোমধ্যে সেচ দেওয়া শুরু করেছেন। কিছু এলাকায় সরিষা থাকায় আরো কিছুদিন পর বোরো আবাদ শুরু হবে।

জানুয়ারি ১০, ২০২৩

ইকবাল কবীর রনজু/এবি/

মন্তব্য করুন: