• ঢাকা

  •  বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

বাংলাদেশ

পুরনো বাস-ট্রাক-অটোরিকশা কেটে টুকরো করে ফেলা হবে

অনলাইন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: ১৫:২২, ৯ জুন ২০২৩

পুরনো বাস-ট্রাক-অটোরিকশা কেটে টুকরো করে ফেলা হবে

আয়ুষ্কাল ফুরানো লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি সড়কে চালানো যাবে না। এগুলো ধ্বংস করতে হবে। সরকার নিয়োজিত ভেন্ডর এ কাজ করবে। পুরোনো গাড়ি টুকরো টুকরো করে ফেলা হবে, যাতে আর ব্যবহার করা না যায়। এসব নিয়ম রেখে 'মোটরযান নীতিমালা- ২০২৩'-এর খসড়া করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। 

খসড়ার ওপর মতামত নেওয়া হচ্ছে। অংশীজনের মতামত সংযোজন করে নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।

সড়ক পরিবহন আইনের ৩৬ ধারায় যানবাহনের আয়ুষ্কাল বা ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণের বিষয়ে বলা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, সরকার বা সরকারের অনুমোদনে কর্তৃপক্ষ যে কোনো ধরনের গাড়ির আয়ুষ্কাল প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে। খসড়ায় বলা হয়েছে, এই বাধ্যবাধকতার কারণেই নীতিমালা করা হচ্ছে।

গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর কার্যকর হওয়া সড়ক পরিবহন বিধিমালায় কোনো গাড়ির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়নি। তবে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ১১১ সুপারিশ বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন টাস্কফোর্স বাসের জন্য ২০ বছর ও ট্রাকের জন্য ২৫ বছর আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করেছে। 

সিএনজিচালিত অটোরিকশার জন্য সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) আগেই ১৫ বছর আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করেছে। নিবন্ধনের ১৫ বছর পর অটোরিকশা বিআরটিএতে নিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলতে হয়, যাতে আর সড়কে চলতে না পারে। তবে এখনো এর কোনো বাস্তবায়ন পরিলক্ষিত হয়নি। খোদ রাজধানীতেই অবাধে চলছে এসব সিএনজিচালিত অটোরিকশা।

স্ক্যাপ নীতিমালা কার্যকর হলেও বাস ও ট্রাকের ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা বাসের আয়ুষ্কাল ২৫ বছর ও ট্রাকের ৩০ বছর নির্ধারণের দাবি জানিয়েছিলেন। তবে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সমকালকে বলেছেন, টাস্কফোর্স যে আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করেছে, তা তারা মেনে নিয়েছেন। 

রাস্তা থেকে লক্কড়ঝক্কড় পুরোনো বাস উচ্ছেদে সমিতি আন্তরিক। সমিতি ২১ বার সভা করেছে মালিকদের নিয়ে। গত ২০ মে বিআরটিএ সভা ডেকেছিল। সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি উচ্ছেদে সহায়তা করা হবে সরকারকে। তবে ২০ বছরের পুরোনো বাস খুব বেশি নেই। ২৫ বছরের পুরোনো অনেক ট্রাক আছে, বলেন এনায়েত উল্যা।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, আয়ুষ্কাল শেষে গাড়ি ডিসপোজাল বা ধ্বংস করলে সড়কে দুর্ঘটনা কমবে। পরিবেশদূষণও কমবে। ২(৫) ধারায় বলা হয়েছে, আয়ুষ্কাল না ফুরালেও অকেজো বা সড়কে চলাচল অযোগ্য ঘোষিত গাড়িও ডিসপোজাল করতে হবে। ৪ ধারায় বলা হয়েছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া, দুর্ঘটনায় ধ্বংসপ্রাপ্ত যানবাহনও স্ক্র্যাপ করতে হবে। অবৈধ ও অনুমোদনহীন তৈরি গাড়িও ডিসপোজাল করতে হবে।

তবে কেউ নিজে নিজে গাড়ি ডিসপোজাল করতে পারবে না। ৬ ধারা অনুযায়ী, বিআরটিএর নিয়োগ করা ভেন্ডর গাড়ি ধ্বংস করবে। ভেন্ডরের পরিবেশ ছাড়পত্র এবং অন্তত ৫০টি গাড়ি রাখার জায়গা থাকতে হবে। 

খসড়ার ৫ (৮) ধারায় বলা হয়েছে, এমনভাবে গাড়ির বগি ও চেসিস ধ্বংস করতে হবে, যাতে তা অন্য কোনো গাড়িতে ব্যবহার করা না যায়। তবে গাড়ির যেসব লোহালক্কড় রয়েছে, সেগুলোর জন্য দাম পাবেন মালিক। ভেন্ডর গাড়ির দাম নির্ধারণ করে মালিককে তা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করবে।

ট্রাকের মতো সব পণ্যবাহী যানবাহনের আয়ুষ্কাল ২৫ বছর। মিনিবাসের জন্যও ২০ বছর আয়ুষ্কাল। তবে প্রাইভেটকারের জন্য আয়ুস্কাল নির্ধারণ করেনি টাস্কফোর্স। 

বিআরটিএ'র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাইভেটকার যতদিন ফিটনেস সনদ পাওয়ার উপযোগী থাকবে, ততদিন চলতে পারবে। 

বিআরটিএ'র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেছেন, খসড়া নীতিমালা সরকারের অনুমোদন পাওয়ার পর কার্যকর হবে। - সমকাল প্রতিবেদন

জুন ৯, ২০২৩

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: