• ঢাকা

  •  বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১৬, ২০২৫

জেলার খবর

গৌরীপুরে জমি দখলের পায়তারার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

 প্রকাশিত: ২২:০১, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

গৌরীপুরে জমি দখলের পায়তারার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

ছবি- সংগৃহীত

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ৭ শতাংশ জমি দখলের পায়তারার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নীলাঞ্জনা সরকার শান্তনা। বুধবার দুপুরে গৌরীপুর সাংবাদিক ঐক্য ফোরাম কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি।
এ সময় নীলাঞ্জনা সরকার শান্তনা অভিযোগ করে বলেন, গৌরীপুর পৌরসভাধীন কালীপুর মধ্যমতরফ মহল্লার মৃত আব্দুল হামিদের স্ত্রী জাহানারা বেগম, মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আব্দুল হান্নান জনি ও মৃত আতিকুর রহমানের স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন গংরা গৌরীপুর মৌজার বি.আর.এস খতিয়ান ৯৬৫ নং এর সাবেক দাগ ১৩৬৬ ও হাল দাগ ২৮০৯ এর ৭ শতাংশ ভূমি দীর্ঘদিন যাবত দখলের পায়তারা করে আসছেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৮৪ সালে ৫২২৯ নং হেবাদলিলমূলে উল্লেখিত ভূমিটি তার স্ত্রী জাহানারা বেগম গংদের নামে হস্তান্তর করতঃ দখলার্পন করে মৃত্যুবরণ করেন। পরে জাহানারা বেগম গং আনোয়ারা বেগমের কাছে বিক্রয় করেন। আমার মাতা জোৎস্না রানী সরকার ১৯৯৭ সালে ২২১নং সাফকাবলা দলিলমূলে আনোয়ারা বেগমের নিকট থেকে ক্রয় করে ৩৮৭৩নং নামজারি খতিয়ান খোলে নিয়মিত খাজনাদি পরিশোধ করেন এবং গৌরীপুর পৌরসভার অনুমোদনক্রমে সীমানা চিহ্নিত করে লিন্টার পর্যন্ত ঘর নির্মাণ করাবস্থায় আমার মাতা আমাকে ও আমার বাবা নয়ন কুমার সরকারকে রেখে মৃত্যুবরণ করেন। হিন্দু আইনানুযায়ী স্ত্রীর সম্পত্তিতে স্বামীর ওয়ারিশান না হওয়ায় আমি একমাত্র উত্তরাধিকারী হিসেবে উল্লেখিত জমি প্রাপ্ত হয়ে নিজ নামে পৃথক নামজারি করে ও ডিসিআর প্রাপ্ত হই এবং হাল নাগাদ সরকারি খাজনাদি ও পৌরকর পরিশোধ করে ভোগ দখলে রয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে নীলাঞ্জনা সরকার আরও অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন সময় আমাদেরকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে এমনকি মালাউনের বাচ্চা বলেও গালি দেন ও ভারত পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরীহ মানুষ হিসেবে তাদের হুমকি ধমকিতে ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে ও যাতে জমি দখল করতে না পারে সেজন্য ২০২১ সালে গৌরীপুর সহকারি জজ আদালত, ঈশ্বরগঞ্জ আদালতে ৯১/২০২১, অন্যপ্রকার একটি মামলা দায়ের করি। এ প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত ২০২২ সালে জাহানারা গংরা উল্লেখিত ভূমিত অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে আমাদের পক্ষে রায় দেন।
তিনি আরও জানান, আমার পিতা বর্তমানে হৃদরোগের সমস্যাসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকায় এবং আমার পড়াশোনার খরচ মেটাতে আমি উল্লেখিত ভূমিটি গৌরীপুর ’৯১ বন্ধু সমিতি বরাবরে বিক্রয় করে দিই। অতঃপর আমি, আমার পিতা ও গ্রহীতাদের নিয়ে জমিটি বুঝাইয়া দিতে গেলে জাহানারা গং আমাকে মালুর বাচ্চাসহ অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকে। ওই দিন জমি পরিমাপ না করেই ফেরত চলে আসি। পুণরায় গত ১০ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে গ্রহীতাদের নিয়ে জমিতে ’৯১ বন্ধু সমিতির সাইনবোর্ড টানানো হয়। কিন্তু ওই দিন রাতেই জাহানারা গং সাইনবোর্ডটি অপসারণ করে নিয়ে যান।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, আমার উপরোক্ত বিষয়টি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক, ময়মনসিংহ মহোদয়, পুলিশ সুপার, ময়মনসিংহ মহোদয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, গৌরীপুর মহোদয়, সহকারী কমিশনার (ভূমি), গৌরীপুর মহোদয়, অফিসার-ইন-চার্জ, গৌরীপুর থানা মহোদয়, ক্যাম্প ইনচার্জ, গৌরীপুর সেনা ক্যাম্প মহোদয় এবং প্রশাসক, গৌরীপুর পৌরসভা মহোদয়গণকে লিখিতভাবে অবহিত করেছি।

অভিযোগের ব্যাপারে আব্দুল হান্নান জনি বলেন, বিষয়টি কয়েকদিন আগে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে সমাধান করা হয়েছে। মাপামাপি করে নিজ নিজ জায়গা উভয় পক্ষ বুঝে নিবে, এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আলোচনায় অভিযোগকারীর পরিবার, ৯১ বন্ধু সমিতির লোকজনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ কেন তাঁরা অভিযোগ দিলেন ও সংবাদ সম্মেলন করলেন, বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ দিদারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ সাপেক্ষে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসবিডি/ওবায়দুর রহমান

মন্তব্য করুন: